জুমবাংলা ডেস্ক : ওয়ারেন্টভূক্ত আসল অপরাধীর সঙ্গে নিজের নাম ও বাবার নাম মিল থাকার সুযোগ নিয়ে অপরাধীকে ‘বাঁচিয়ে দিতে’ নিরীহ এক ব্যবসায়ীকে ‘অপরাধী’ সাজিয়ে জেলে পাঠিয়েছে হাটহাজারী মডেল থানা পুলিশ। অথচ মায়ের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র ভিন্ন।
ওই দুজনেরই বাড়ি একই ইউনিয়নে। গত ৫ ডিসেম্বর শনিবার রাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ধলই ইউনিয়নে ঘটেছে এমন কাণ্ড।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার রাতে হাটহাজারী মডেল থানার এএসআই আবুল কালাম প্রকৃত আসামির বদলে উপজেলার ধলই ইউনিয়নের পশ্চিম ধলই এলাকার ছোটকা মজুমদার বাড়ির ফরিদুল আলম এবং হালিমা বেগম পুত্র ব্যবসায়ী জাহেদুল আলম আটক করে। পরে তাকে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে। হাটহাজারীর সিটি সেন্টারে জাহেদুল আলমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
তার পরিবারের অভিযোগ, প্রকৃত আসামি বড় অংকের টাকা নিয়ে তাকে বাঁচাতেই পুলিশ এমন কাণ্ড করেছে। আটকের সময় বহুবার অনুরোধ করলেও পুলিশ কোনো ধরণের কর্ণপাত করেনি।
সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরীর দক্ষিণ পতেঙ্গা এলাকায় এমএস ব্রাইড সোপ ফ্যাক্টরির মালিক জাহিদুল আলম। তিনি ওই ফ্যাক্টরির নামে ইসলামী ব্যাংক হালিশহর শাখা থেকে ৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। খেলাপি হওয়ায় ২০১৮ সালে জাহিদুল আলমের বিরুদ্ধে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন ইসলামী ব্যাংক হালিশহর শাখার জুনিয়র অফিসার মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। এ মামলায় জাহিদুলকে এক বছরের সাজা দেন চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক।
এর আগে ২০১৬ সালে ১১ লাখ টাকা পাওনা আদায়ের জন্য জাহিদুল আলমের বিরুদ্ধে অপর একটি মামলা করেন চান্দগাঁও এলাকার হাজী আজগর আলী মার্কেটের সোহা এন্টারপ্রাইজের মালিক আবু বক্কর সিদ্দিকী। এই মামলায়ও জাহিদুলকে দুই মাসের সাজা দেন আদালত। দুই মামলাতেই গত বছরের ৩০ মে জাহিদুলের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করেন আদালত। ওই ওয়ারেন্টের কপি হাটহাজারী থানায় পাঠানো হয়।
দুই মামলারই ওয়ারেন্টভূক্ত আসামি মো. জাহিদুল আলমের পিতা ফরিদ আহমদ এবং মাতা ফরিদা আক্তার। তার বাড়ি হাটহাজারী উপজেলার কাটিরহাট পশ্চিম ধলই এলাকায় হলেও বর্তমানে সে ডবলমুরিং থানাধীন আগ্রাবাদ আবাসিক এলাকায় বসবাস করছে।
নামের মিলে জেলে যাওয়া মো. জাহেদুল আলমের আইনজীবী মোহাম্মদ এমরান নাঈম বলেন, ইসলামী ব্যাংক হালিশহর শাখা থেকে প্রকৃত আসামির জাতীয় পরিচয়পত্রের সার্টিফাইড কপি আনা হয়েছে। সেখানে দেখা যায়, ওয়ারেন্টের ব্যক্তির ছবির সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির চেহারার কোনো মিল নেই। দুজনের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরও আলাদা। নামেই শুধু আংশিক মিল। স্থায়ী ঠিকানা ও বাবার নাম মিল থাকলেও মায়ের নামের মিল নেই। অথচ ব্যাংকের সাথে প্রতারণা না করেও জেল খাটছে জাহেদুল আলম।
ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে অভিযুক্ত এএসআই আবুল কালাম জেলে থাকার জাহেদকে আটকের সময় তার পরিবারের সদস্যরা এ বিষয়ে কোনো কিছু জানায়নি।
হাটহাজারী থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশ মনে করেছে এ লোক ওয়ারেন্টভুক্ত সেই লোক। তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই লোক আসল অপরাধী না হলে অবশ্যই ছাড়া পাবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। সূত্র : যুগান্তর।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।