নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আজ দুপুর ১২টায় মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ীতে এক জনসভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে মাওয়া পয়েন্টে উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করার পর পদ্মা সেতুর পার হয়ে এই জনসভায় ভাষণ দেবেন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ঘিরে সেখানে বিরাজ করছে সাজ সাজ রব। ভোর থেকেই সমাবেশস্থলে নেমেছে মানুষের ঢল। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা দলে দলে মানুষ আসছেন সমাবেশস্থলে। নানা রঙের টি-শার্ট পরে ঢোল-ঢাক-বাঁশি বাজিয়ে আসছেন হাজারো মানুষ। অনেকের হাতে ব্যানার, ফেস্টুন।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক বলেন, উদ্বোধন উপলক্ষে তারা সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন এবং বিশাল সমাবেশে প্রায় ১০ লাখ মানুষ যোগ দেবেন।
পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত অনুষ্ঠানস্থলটি ১১টি পিলারের উপর ১০টি স্প্যান বিশিষ্ট একটি প্রতীকী অস্থায়ী পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে জমকালোভাবে সাজানো হয়েছে।
প্রতীকী সেতুর সামনে উদ্বোধনী মঞ্চস্থাপন করা হয়েছে। অস্থায়ী সেতুটি ২০০ ফুট লম্বা ও ৮ ফুট চওড়া। আর মঞ্চটি ১৫ ফুট লম্বা এবং ৪০ ফুট চওড়া।
মঞ্চের সামনে একটি ৬০ ফুট লম্বা বিশালাকার নৌকা পানিতে ভাসছে। এছাড়া সেখানে বেশ কিছু ছোট নৌকাও রয়েছে। প্রায় ১৫ একর জায়গার ওপর ভেন্যু প্রস্তুত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান উপলক্ষে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠান মঞ্চ প্রাঙ্গণে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর সদস্য, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এবং এসএসএফ সদস্যরা অনুষ্ঠানস্থলে কাজ করছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ আজ কাঁঠালবাড়ীর অনুষ্ঠানস্থল পরিদর্শন করেছেন।
গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে কোনো অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
মির্জা আজম সমাবেশের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক জনসভার পর এই সমাবেশটি দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় বৃহত্তম সমাবেশ হবে।
ড. বেনজীর আহমেদ অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার পথে সকল পয়েন্ট ও মোড়ে চেকপোস্ট বসানোসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, নজরদারির জন্য আধুনিক ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়েছে।
বিশাল জনসমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি হিসেবে ৫০০ অস্থায়ী টয়লেট, ভিআইপিদের জন্য ২২টি টয়লেট, বিশুদ্ধ পানি, একটি ২০ শয্যা ও দুটি ১০ শয্যা বিশিষ্ট ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল ও চিকিৎসা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে অ্যাম্বুলেন্স সুবিধাও রাখা হবে।
পুরো মাদারীপুর জেলা উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে, যেখানে রাস্তা-ঘাটে রঙিন ব্যানার টানিয়ে রাখা হয়েছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আতশবাজি ও লেজার প্রদর্শন। এছাড়া মানুষের মাঝে মিষ্টিও বিতরণ করা হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, অনুষ্ঠানটি হবে একটি ঐতিহাসিক আয়োজন এবং এতে প্রায় ১০ লাখ লোক অংশ নেবে।
নিজস্ব অর্থায়নে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দেশের বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু আগামীকাল উদ্বোধন করা হলেও সেতুর ওপর দিয়ে পরের দিন (রবিবার) সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
সেতুটি রাজধানী ঢাকা ও অন্যান্য প্রধান শহর সহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ২১টি জেলার সাথে সড়ক যোগাযোগে ব্যাপক অগ্রগতি আনবে।
সেতুটির উদ্বোধন উপলক্ষে দেশে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ এই সেতু দিয়ে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের সুবিধা পাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।