জুমবাংলা ডেস্ক : ভালোবাসা যদি সত্য হয়, তা কখনো মরে না- এ কথাটিই আবার প্রমাণ করলেন বরগুনার এক সাংবাদিক ও ডেনমার্কের এক নারী।
দীর্ঘ দুই যুগ পার হলেও ভালোবাসার টানে ঠিকই সাবেক স্বামীর কাছে ফিরে এসেছেন ডেনমার্কের নাগরিক রোমানা মারিয়া বসি। আর তাতেই যেন উষ্ণ ভালোবাসায় রঙিন হয়ে উঠেছে সাংবাদিক মাহাবুবুল আলম মান্নুর বাড়ির আঙিনা।
সুদূর ডেনমার্ক থেকে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বরগুনায় এসে পৌঁছান রোমানা মারিয়া বসি। এরপর রাতেই পৌর শহরের থানাপাড়া সংলগ্ন মান্নুর বাসায় আয়োজিত এক ছোট পরিসরের অনুষ্ঠানে পুনরায় পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তারা।
বিয়ে সম্পাদনে মেয়েপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেন বরগুনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সোহেল হাফিজ ও সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মো. সালেহ।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে ডেনমার্কে অবস্থানকালে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বরগুনার মাহবুবুল আলম মান্নু (৬০) ও ডেনিশ নাগরিক মারিয়া (৪৬)। এরপর তারা বিয়েও করেন।
বিয়ের পর ১৯৯৭ সালে মারিয়াকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন মান্নু। এখানে একটি বেসরকারি ক্লিনিক দিয়ে ভালোই চলছিল তাদের সংসার। তবে কিছুদিন পর পারিপার্শ্বিক জটিলতায় তাদের ব্যবসায় ধস নামে।
পরে ২০০০ সালে মান্নুর ইচ্ছাতেই ডেনমার্কে ফিরে যান মারিয়া। কথা ছিল- সব কিছু বিক্রি করে মান্নুও ফিরে যাবেন মারিয়ার কাছে। কিন্তু বিধি বাম! পারিবারিক জটিলতায় আর যাওয়া হয়নি মান্নুর।
২০০৩ সাল পর্যন্ত টেলিফোনে যোগাযোগ থাকলেও ধীরে ধীরে তাদের দূরত্ব বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মান্নু মারিয়াকে বলেন- তার পরিবারের কথা মেনে নতুন জীবন শুরু করতে।
এদিকে নিঃসঙ্গতায় একে একে কেটে যায় মান্নুর জীবনের ২৪টি বছর। সাংবাদিকতায় জড়িয়ে পড়লেও হৃদয়ে গেঁথে থাকা মারিয়াকে ভুলতে পারেননি তিনি। বর্তমানে মাহবুবুল আলম মান্নু দৈনিক আমাদের সময়ের বরগুনা জেলা প্রতিনিধি ও জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে, দূরত্ব আর পারিবারিক চাপে পড়ে মারিয়া বাধ্য হন নতুন সম্পর্কে জড়াতে। তবে সেই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সেখানে বিচ্ছেদের পর শুরু হয় মারিয়ার ভালোবাসার মানুষ ও সাবেক স্বামীকে খোঁজার নতুন অভিযান।
প্রযুক্তির আশীর্বাদে ফেসবুকের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আবার যোগাযোগ হয় মান্নু ও মারিয়ার। এরপর মান্নুকে আবার বিয়ে করতে বাংলাদেশে আসেন মারিয়া। বিমানবন্দরে মারিয়াকে স্বাগত জানান মান্নু নিজেই।
ভালোবাসার মানুষকে আবার ফিরে পেয়ে সংবাদকর্মী মাহবুবুল আলম মান্নু বলেন, পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন কারণে আমাদের ২৪ বছর যোগাযোগ ছিল না। গত বছরের ডিসেম্বরে ফেসবুকের মাধ্যমে মারিয়া আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ডেনমার্কের একটি এলাকার সিটি করপোরেশনে চাকরি করছেন। মারিয়া মাত্র ১০ দিনের ছুটি নিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।
তিনি বলেন, অ্যাম্বাসির সঙ্গে কথা হয়েছে। আমাদের ম্যারেজ সার্টিফিকেট সেখানে জমা দিলে তার দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে থাকার ব্যবস্থা হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন তারা। এছাড়া যদি আমি তার সঙ্গে ডেনমার্কে চলে যাই, তাতেও রুমানার কোনো আপত্তি নেই। আর যদি না যাই, তাহলে তিনি আগামী মাসে তার কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসবেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।