আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মাত্র একটি ছবি, এই ছবির যে কী শক্তি মানুষ মাঝে-মধ্যেই বুঝতে পারে। এই ছবি মানুষকে কাঁদাতে যেমন পারে তেমনি হাসাতেও পারে। আবার পারে মানুষকে বাকরুদ্ধ করতেও। তেমনি একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, যা বিশ্বকে হতবাক করে দিয়েছে। ছবিটি সেই যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার, যেখানে প্রতি মুহূর্তে মৃ’ত্যু হচ্ছে মানবতার৷
বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তোলা ওই ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, বিমান হামলায় ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে একটি বহুতল বাড়ি৷ আর ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বিপজ্জনকভাবে ঝুলছে বছর সাতের এক শিশুকন্যা ও তার সাত মাস বয়সী বোন৷ ছোট বোনকে বাঁচাতে তার জামা টেনে ধরে রয়েছে বড় বোন। যদিও তার নিজের অবস্থাই যায় যায়। কিছুটা ওপরে দাঁড়িয়ে আর্তনাদ করছেন তাদের বাবা।
নিজে মৃ’ত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ছোট্ট বোনকে বাঁচানোর এই লড়াইকে চোখের পানিতে কুর্নিশ জানিয়েছে বিশ্ব৷ কিন্তু বাঁচানো যায়নি ওই বড় বোন রিহামকে। ছোট বোন টোকার জীবন বাঁচিয়ে মৃ’ত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সে।
ঘটনাটি ঘটেছে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তের ইদলিব প্রদেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত আরিহা শহরে। সরকারবিরোধী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ওই শহরে লাগাতার বোমাবর্ষণ করছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও রাশিয়া৷ সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার-আল-আসাদ আগেই জানিয়েছিলেন, ইদলিব প্রদেশ থেকে যেকোনো মূল্যে বিদ্রোহীদের হঠিয়ে দেওয়া হবে৷
প্রায় আট বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে একমাত্র ইদলিব প্রদেশই সরকার বিরোধীদের দখলে রয়েছে৷ দেশটিতে ইসলামিক স্টেটের পরাজয়ের পর রাশিয়ার সাহায্যে ইদলিব দখল নিতে মরিয়া প্রেসিডেন্ট আসাদ৷ তারই অংশ হিসেবে গত বুধবারও আরিহা শহরে প্রচণ্ড বোমাবর্ষণ করে সিরিয়া ও রাশিয়ার বিমানবাহিনী৷
ওই বিমান হামলার সময়ই একটি বোমা এসে পড়ে আমজাদ-আল-আবদুল্লাহর বাড়িতে৷ প্রচণ্ড আঘাতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় বহুতল ভবনটি৷ কংক্রিটের চাঙড়ের নিচে চাপা পড়ে যায় আবদুল্লাহর পরিবার৷ আর এই ঘটনা ক্যামেরাবন্দি করেন স্থানীয় এক ফটো সাংবাদিক৷
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, ভেঙে পড়া বহুতল ভবনটির ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার করে টোকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মাথায় চোট লাগায় আপাতত আইসিইউতে রাখা হয়েছে শিশুটিকে।
অন্যদিকে, তার তৃতীয় বোনেরও বুকে অস্ত্রোপচার হয়েছে। সে এখনও হাসপাতালে ভর্তি। এ ছাড়া ওই বাড়িটি ভেঙে তাদের মায়েরও মৃ’ত্যু হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।