জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে এক যুবতীকে ধর্ষণ করে এক যুবক। অভিযুক্ত যুবকের নাম বুলবুল আহমেদ বিপুল (৩২)। সে ভাঙ্গুড়া উপজেলার গজারমারা গ্রামের ইসমাইল হোসেনর পুত্র।
জানা গেছে, প্রায় ৪ বছর আগে ফেসবুকে দু’জনের পরিচয়। এরপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই প্রেমের সম্পর্ক করে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়। আর এই শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারন করে ছেলেটি দীর্ঘ ২ বছর যুবতীকে ধর্ষণ করে আসছে বলে মেয়েটি এমন অভিযোগ নিয়ে ছেলের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছে।
ধর্ষণের স্বীকার ঐ যুবতীর বাড়ি পার্শ্ববর্তী সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। গত ২৮ তারিখ থেকে বিপুলের বাড়িতে অবস্থান করছে সে। শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে বিপুলের বাড়ির লোকজন মারধোর করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
ভুক্তভোগী মেয়ে জানান, প্রায় ৪ বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে বিপুলের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর তাদের সম্পর্ক প্রেমে রুপ নেয়। এর কিছুদিন পর বিপুল তাকে দেখা করার জন্য চাপ দিলে ঐ যুবতী তার সাথে দেখা করে। ঐসময় বিপুল তাকে তার বোনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয় ও ঘটনাটি কৌশলে মুঠোফোনে ধারণ করে।
পরবর্তীতে সেই ভিডিও দেখিয়ে যুবতীর ভাষ্যমতে অন্তত ২৫ বার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ঐ যুবতী গর্ভবতী হয়ে পরলে পাঁচ মাস গর্ভাবস্থায় ঔষধের মাধ্যমে বাচ্চা নষ্ট করতে বাধ্য করে বিপুল। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে ঐ যুবতী বিপুলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেও মুক্তি মেলেনি তার। এরপর সে বিপুলকে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। বিপুল বিষয়টি এড়িয়ে যেতে শুরু করলে ঐ যুবতী ২৮ ডিসেম্বর উল্লাপাড়া থেকে ভাঙ্গুড়া উপজেলার সিএনজি স্ট্যান্ডে এসে বিপুলের খোজ করতে থাকে। সেখানে উপস্থিত লোকজন বিপুলকে চিনতে পেরে বিপুলকে খবর দিলে বিপুল সেখানে উপস্থিত হলেও কৌশলে সেখান থেকে সটকে পরে।
উপায় না পেয়ে ঐ যুবতী উপস্থিত লোকদের মাধ্যমে ঠিকানা নিয়ে বিয়ের দাবীতে বিপুলের বাড়িতে উপস্থিত হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আফসার আলী জানতে পারে এবং মেয়েটির যেনো কোনো ক্ষতি না হয় তার নিরাপত্তায় গ্রাম পুলিশ নিয়োগ করেন। গ্রাম পুলিশের পাহারায় গত দুই দিন সেখানে থাকলেও ৩১ ডিসেম্বর সকালে ঐ যুবতীকে বিপুলের পরিবারের লোকজন মারধোর করে বাড়ি থেকে বের করে দিলে বিষয়টি জানাজানি হয়।
যুবতীকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়ার কারন জানতে চাইলে বিপুলের পিতা ইসমাইল হোসেন সেখানে উপস্থিত সকলের সামনে জানান, উচ্চমহলের নির্দেশেই তিনি ঐ যুবতীকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। ঘটনা শুনে চেয়ারম্যান আফসার আলী পুনরায় সেখানে উপস্থিত হয়ে বিপুলের পিতা ইসমাইল হোসেনকে তার ছেলে কে হাজির করতে চাপ প্রয়োগ করেন। এবং ঐ যুবতীকে যেনো আর মারধোর করা না হয় সেই বিষয়ে গ্রাম পুলিশকে নির্দেশনা দেন।
তিনি বলেন, শুধু প্রেমের সম্পর্কের কারনে সম্মান বিসর্জন দিয়ে সাধারনত কোনো মেয়ে অন্যের বাড়িতে চলে আসতে পারে না। মেয়ের অভিযোগ তাকে ভিডিও দেখিয়ে ধর্ষন করা হয়েছে আমিও সেটা বিশ্বাস করি। ছেলের বাবাকে তার ছেলেকে হাজির করতে বলা হয়েছে এবং মেয়ের পরিবারকে সংবাদ পাঠানো হয়েছে তারা আসলে বিয়ে দিয়ে দেয়া হবে।
ভাঙ্গুড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফয়সাল বিন আহসান বলেন, বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। শুনেছি বিষয়টি সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেখানে বিট কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছ।
Own the headlines. Follow now- Zoom Bangla Google News, Twitter(X), Facebook, Telegram and Subscribe to Our Youtube Channel