জুমবাংলা ডেস্ক : করোনা পরিস্থিতিসহ পবিত্র মাহে রমজানকে পুঁজি করে বরগুনার বেতাগীতে অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। সীমিত পণ্য সরবরাহ ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির অজুহাতে বেড়েছে চাল, আদাসহ, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, চিনি, অনেক পণ্যসামগ্রীর দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে অস্বাভাবিক নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে ওঠায় বিপাকে পড়ছেন সীমিত আয়ের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষ।
সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেল, একদল অসাধু মজুদদার ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে বাজার অস্থিতিশীল করছে এমন অভিযোগ খুচরা ব্যবসায়ীদের। অধিক মুনাফা লাভের আশায় এসব অসাধু ব্যবসায়ীরা চাল, ডাল, চিনি, তেলসহ নিত্যপণ্যের মজুদ বাড়াচ্ছে তাঁদের গুদামে।
এদিকে দোকানে মূল্য তালিকা প্রদর্শনসহ বাজার নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলেও থেমে নেই এসব সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য।
পত্রিকায় নাম না ছাপানোর শর্তে একাধিক সূত্রে জানিয়েছেন, সিন্ডিকেট করে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বৃদ্ধি করার কথা। তাঁদের দাবি, ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ঢাকা থেকে মাল এনে বাজারে সরবরাহ করছেন। তারাই ব্যবসায়ীদের মূল্য নির্ধারণ করে দিচ্ছেন।
অপরদিকে একাধিক অসাধু ব্যবসায়ী ভিজিডি, ভিজিএফ, ফেয়ার প্রাইস, ওএমএসের চাল ও খাদ্য গুদামসহ অসৎ জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে গোপন কানেকশনে ক্রয় করেছেন। এসব ব্যবসায়ী চাল গুদামজাত করে অধিক মুনাফার আশায় কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে কি না তাও খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করছেন তারা।
চাল ব্যবসায়ীসহ ক্রেতাদের সূত্রে জানা যায়, এক সপ্তাহ পূর্বে জেলায় চালের বাজারে ৫০ কেজি ওজনের প্রতিবস্তা সাদা মোটা ছিল ১৭০০ টাকা, বর্তমানে ২২০০ টাকা, নূরজাহান টেপু’র মূল্য ছিল ১৪৫০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ টাকায়। দাদা মিনিকেট আগে ছিল ২৩০০ টাকা বস্তা বর্তমানে ২৯০০ টাকা। বালাম-২৮ ছিল ১৮০০, বর্তমানে ২৪০০ টাকা। কাজল মোটা ছিল ১২৫০, বর্তমানে ১৯০০ টাকা। ১৫০০ টাকার স্বর্ণ মুশুরী বর্তমানে ২২০০ টাকা। ২১০০ টাকার পাইজাম চাল বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৪০০ টাকায়। বস্তাপ্রতি চালের এমন মূল্য বৃদ্ধির ফলে খুচরা বাজারে প্রকারভেদে প্রতিকেজি চালের মূল্য বেড়েছে ১০-১৬ টাকা।
একাধিক চাল ব্যবসায়ীসহ মিল মালিকদের দাবি, সরকার মাঠ পর্যায়ে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের ফলে মিল মালিকদের কাছে চালের মজুদ নেই। তাছাড়া এ অঞ্চলের বাজারে বেশির ভাগ চাল আসে ঢাকা ও দিনাজপুর থেকে। লাগাতার লকডাউনে সরবরাহ কম থাকায় পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি চালের মূল্য বেড়েছে ৫০০-৭০০ টাকা হারে। খুঁচরা বাজারে যা আরো বেশি। তবে বোরো ধানের চাল বাজারে এলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এমন আশাও তাদের।
মূল্য বেড়েছে মুদি মালের বাজারেও। রমজান শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই বেশি ব্যবহৃত পণ্যসামগ্রীর মধ্যে আদার দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এক সপ্তাহ পূর্বে প্রতিকেজি ১২০ টাকার আদা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়। ৩৫ টাকার প্রতিকেজি পেঁয়াজ বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকায়। প্রতিকেজি ১৬ টাকার আলু বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা। ৭৫ টাকার প্রতিকেজি রসুন বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। প্রতিকেজি ছোলাবুট ছিল ৭০ টাকা, বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। প্রতিকেজি মসুর ডাল ছিল ৬০ টাকা বর্তমানে প্রকারভেদে ১২০ টাকা পর্যন্ত টাকা। ৯০ টাকার সয়াবিন তেল বর্তমানে ১০০ টাকা এবং ৫৫ টাকার চিনি বর্তমানে ৮৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এক সপ্তাহ পূর্বে মুড়ি প্রতিকেজি ছিল ১০০ টাকা বর্তমানে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাজীব আহসান বলেন, ‘প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়ানোসহ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হচ্ছে। রমজান মাসে উপজেলা পৌর বাজারসহ স্থানীয় বাজারগুলোতে বিশেষ মনিটরিং সেল গঠন করে দেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।