আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের বিরুদ্ধে ফের ভূখণ্ড নিয়ে সুর চড়াল নেপাল। কালাপানির পর এবার উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল ও দেরাদুনকেও নিজেদের ভূখন্ড বলে দাবি করছেন নেপাল। নেপালের এই দাবি প্রকাশ্যে আসার পর শুরু সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিতর্ক।
কালাপানির পর এবার উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল ও দেরাদুনকেও নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করল নেপাল (Nepal)। তাদের এ দাবির কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি দেশের শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টি, ইউনিফায়েড নেপাল ন্যাশনাল ফ্রন্টের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ‘গ্রেটার নেপাল’ ক্যাম্পেনিং শুরু করেছে। যাতে ১৮১৬ সালের সুগৌলি চুক্তির আগে নেপালের যে ম্যাপ ছিল তার প্রচার করা হচ্ছে। ওই ম্যাপের ছবিতে থাকা উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, বিহার এমনকী সিকিমের বড় বড় শহরকে পর্যন্ত নিজেদের বলে দাবি করছে তারা। নেপালের সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে।
ইতিমধ্যে এই ক্যাম্পেনিংয়ের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রচুর নেপালি যুবক-যুবতীদের। খোলা হয়েছে ‘গ্রেটার নেপাল’ নামে একটি ফেসবুক পেজও। টুইটারেও সক্রিয় রয়েছে শাসকদলের একটি দল। তবে চাঞ্চল্যকর বিষয় হল, এই কাজে ব্যবহারের জন্য খোলা ‘গ্রেটার নেপাল’ ইউটিউব চ্যানেল। সেই চ্যানেলে নেপালের পাশাপাশি পাকিস্তানের যুবক-যুবতীদেরও ভারতের বিরুদ্ধে কুৎসা ছড়ানোর কাজে লাগানো হচ্ছে। পাকিস্তানের যুবক-যুবতীরা ভারতের বিরুদ্ধে প্রচার করার সময় নিজেদের ছবির বদলে পারভেজ মুশারফ, নওয়াজ শরিফ ও পাকিস্তানের পতাকা ছবি ব্যবহার করছে।
এ প্রসঙ্গে ভারত ও নেপাল সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা জানান, কমিউনিস্ট পার্টি নেপালের ক্ষমতা আসার পর থেকেই গ্রেটার নেপাল নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়েছে। এই বিষয়ে কাঠমাণ্ডু ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল রাষ্ট্রসংঘে দাবিও জানিয়েছিল। যদিও তা কোনো কাজে আসেনি। কিন্তু, গ্রেটার নেপাল কর্মসূচি ফের গতি পেয়েছে চীনের সঙ্গে ভারতের বিবাদ হওয়ার পর থেকেই। এরই অঙ্গ হিসেবে লিপুলেখ-সহ তিনটি ভারতীয় ভূখণ্ডকে নিজেদের মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধান সংশোধন করেছে ওলির সরকার।
উল্লেখ্য, এর আগে উত্তরাখণ্ডের যে তিনটি অঞ্চলকে নেপাল নিজেদের বলে দাবি করছিল, তার কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই বলে তখনই সাফ জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। পাশাপাশি ওই অঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলেও বিদেশ মন্ত্রকের তরফে স্পষ্ট করা হয়েছিল। গত ৮ মে লিপুলেখ গিরিপথ থেকে কৈলাস মানস সরোবরে যাওয়ার নয়া ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তার উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এর পরেই ভারত এবং নেপালের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল। সঙ্গেসঙ্গেই এই রাস্তা উদ্বোধনের প্রতিবাদ জানায় কাঠমান্ডু। পালটা হিসেবে নতুন মানচিত্র প্রকাশে উদ্যোগী হয় নেপাল। নতুন মানচিত্রে ভারত-নেপাল সীমান্তের লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে নেপালের অংশ হিসেবে দাবি করা হয়। এবার তাতে যোগ করা হল নৈনিতাল এবং দেরাদুনকেও।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।