মোঃ সজল আলী, মানিকগঞ্জ : দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে ও কৃষকের অতিরিক্ত খরচ ও কষ্ট লাঘব করতে কৃষিসেবা কৃষকের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে সারের ডিলার নিয়োগ দিয়েছে।
মানিকগঞ্জের ৭টি উপজেলার বেশিরভাগ মানুষই কৃষি নির্ভর। কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে এসব উপজেলার সাধারণ মানুষ।
বন্যা শেষে জেলার বিভিন্ন উপজেলার সাধারণ কৃষক শীতের সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ শুরু করেছে। এদিকে মৌসুমের শুরুতেই সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বেশি দামে সার বিক্রি করে কৃষকের কষ্টের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কিছু অসৎ সার ব্যবসায়ীরা।
জেলার সাতটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ বছর বন্যা দেরিতে শেষ হওয়ায় তারা শাক সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ একযোগে শুরু করেছে। তাই কৃষকের সারের চাহিদা অনেক বেশি। এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে সারের ডিলাররা সার পাওয়া যাচ্ছে না ও বেশি ামে সার কিনতে হয় বলে কৃষকের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি ামে সার বিক্রি করছে।
সরেজমিনে বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন সার ব্যবসায়ীরা ডিএপি,টিএসপি ও ইউরিয়া সার সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক ামে বিক্রি করছে। কৃষি অফিসাররে সঠিক তদারকির অভাবে এসব সার ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ৮’শ টাকার ডিএপি ও ইউরিয়া সার ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে। ১১’শ টাকার টিএসপি ১৫০০ থেকে ১৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গোলড়া গ্রামের কৃষক মামুন মিয়া জানান, সাটুরিয়া উপজেলার কেট্টা বাজার থেকে খুচরা ডিলারের দোকান থেকে ১৫৩০ টাকা দিয়ে এক বস্তা ডিএপি সার কিনেছেন। তিনি বলেন, আমরা তো সারের সঠিক াম জানিনা। ােকানদাররা যে াম বলে আমারে ওই দামেই সার কিনতে হয়।
হরিরামপুর উপজেলার ব্যাসদি গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী জানান, পেঁয়াজ আবাদের জন্য মূল ডিলারের দোকানে সার না পেয়ে ঝিটকা বাজারের খুচরা ডিলারের দোকান থেকে বেশি ামে সার কিনতে হয়েছে। পেঁয়াজের আবারে মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। সারের দাম বেশি নিলেও এখন সার না কিনে উপায় নেই।
সিংগাইর উপজেলার চর জামালপুর গ্রামের কৃষক বলাই বেপারী জানান, আমার সরিষা ক্ষেতের জন্য বায়রা বাজার সার কিনতে থেকে ১৫ কেজি ইউরিয়া সারের াম ৩ শত টাকা নিয়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার তো আমারে জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা দেয়। কিন্ত আমরা সেই সুযোগ সুবিধা পাইনা। কিছু কিছু লোকের জন্য আমরা কৃষি কাজ করে লাভের মুখ দেখিনা।
এদিকে খুচরা সার ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা তো খুচরা ডিলার। আমাদের মূল ডিলাররা সারের সংকটের কথা বলে আমাদের চাহিদা অনুযায়ী সার দেয়না। কৃষক পুরোদমে কৃষি কাজ শুরু করেছে। কৃষকের সারের চাহিদা অনেক। দোকান চালাতে বাধ্য হয়ে বাইরে থেকে বেশি ামে সার কিনে বেশি ামে বিক্রি করতে হয়।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ আইয়ুব আলীকে গত তিন দিন যাবৎ বার বার ফোন দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ শাহজাহান আলী বিশ^াস বলেন, সার অতিরিক্ত ামে বিক্রি করার কোন সুযোগ নাই। যি কেউ বেশি দামে বিক্রি করে থাকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।