জুমবাংলা ডেস্ক : সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে সাজানো ও কাল্পনিক গল্প দিয়ে মিথ্যা মামলা করে ফেঁসে গেলেন সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে মামলাটি থেকে অব্যাহতি দিয়েছে দুদক। গল্প ফেঁদে সাজানো মামলা করায় নাজমুল হুদার বিরুদ্ধেই মামলা করতে যাচ্ছে দুদক।
বুধবার কমিশন সভায় এ সংক্রান্ত মামলার অনুমোদন দেয়া হয় বলে সাংবাদিকদের জানান দুদকের মহাপরিচালক সাঈদ মাহবুব হাসান খান। নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৮(গ)(২) ধারায় একটি নিয়মিত মামলা রুজুর অনুমোদন দেয়া হয় দুদক থেকে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন।
সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার কাল্পনিক অভিযোগ এনে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেন। দণ্ডবিধির ১৬১ ধারা (ঘুষ চাওয়া) ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় (ক্ষমতার অপব্যবহার) এ মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলা নং-৪৯। থানায় দায়ের করা এ মামলার তদন্ত পায় দুদক। তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে।
তদন্তকালে দুদকের কর্মকর্তা মামলাটির বাদী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা ও তার কয়েকজন জুনিয়রকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। যাদের তিনি মামলায় সাক্ষী মেনেছিলেন। দুদকের জিজ্ঞাসাবাদে নাজমুল হুদা বা তার সহযোগীরা অভিযোগের সপক্ষে কোনো তথ্য-প্রমাণ দিতে পারেননি।
এস কে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকার সময় নাজমুল হুদার কাছে ঘুষ চেয়েছেন- এমন কোনো প্রমাণ তারা দুদককে দিতে পারেননি। তাকে এ নিয়ে জেরা করা হলে কোনো সদুত্তরও দিতে পারেননি। বরং দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে নাজমুল হুদা স্বীকার করেন, তিনি ভুল করে এ মামলা করেছেন।
এদিকে দুদকের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, মামলাটি ছিল কাল্পনিক ও সাজানো। এমন সাজানো ঘটনা মিথ্যা মামলা হিসেবে তদন্তে প্রমাণিত হয়। এজাহারকারী নাজমুল হুদার অসৎ উদ্দেশ্য ছিল- আদালতের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা। তার এই হীন মানসিকতার কারণে আলোচ্য মিথ্যা মামলাটি তিনি রুজু করেছেন মর্মেও প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।
এ কারণে অত্র মামলায় ‘এফআর অ্যাজ আইএম’ বা ফাইনাল রিপোর্ট অ্যাজ ইন্টেনশনালি ফলস’ বা চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিলের সুপারিশ করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। একই সঙ্গে নাজমুল হুদা জেনেশুনে অসৎ উদ্দেশ্যে আদালতের ভাবর্মূতি ক্ষুণ্ণ করার জন্য মামলাটি করেন। এ ছাড়া তার (এস কে সিনহা) বিরুদ্ধে রুজুকৃত শাহবাগ থানার মামলাটি প্রশ্নবিদ্ধ করার মানসে অত্র এজাহারে মিথ্যা ঘটনার অবতারণা করেন। তদন্তে এটাই প্রমাণিত হয়। এ কারণে নাজমুল হুদার বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৮(গ)(২) ধারায় একটি নিয়মিত মামলা রুজুর অনুমোদন দেয় কমিশন।
প্রসঙ্গত, একটি মামলাকে কেন্দ্র করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকা ঘুষ দাবি ও গ্যারান্টির ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা চাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন নাজমুল হুদা। এই টাকা না দিলে তার মামলা পুনরায় চালু করা হবে মর্মেও এস কে সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। তবে তিনি ঘুষ দিয়েছেন- এমন কোনো কথা মামলায় বলেননি। ঘুষ না দিয়ে নিষ্পত্তি হওয়া মামলা সচল করা হবে মর্মে তিনি অভিযোগ আনেন এস কে সিনহার নামে। যদিও এসব অভিযোগ পুরোটাই বানোয়াট ও কাল্পনিক বলে দুদকের তদন্তে প্রতিষ্ঠিত হয়। সূত্র : যুগান্তর
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।