নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: গাজীপুরের শ্রীপুরে ঘরের মেঝেতে পড়েছিল তামান্না আক্তার (১৯) নামের এক গৃহবধূর মরদেহ। এ ঘটনার পর থেকে দেড় বছরের কন্যা শিশুসহ পলাতক রয়েছেন স্বামী। গৃহবধূর পরিবারের অভিযোগ, পরকীয়ার জেরে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে স্বামী।
সোমবার(০৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ ধনুয়া গ্রাম থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহতের ছোট বোন বোনের বাড়িতে ঘরের মেঝেতে বোনের মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন।
নিহত গৃহবধূ ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার বাড়া গ্রামের মো. আলতাফ হোসেনের মেয়ে। তিনি স্বামীর সঙ্গে গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
নিহতের স্বামী মো. সামিউল ইসলাম (২৭) ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের মো. শাহজাহানের ছেলে। তিনি শ্রীপুরের স্থানীয় একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকের কাজ করতেন।
নিহতের ছোট বোন তাহেরা বলেন, ‘দীর্ঘ দিন থেকে আমার দুলাভাই অন্য এক মেয়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলতেন। এ নিয়ে প্রায় সময় তাদের দুজনের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হতো। গতকাল আপা আমাকে ফোন দিয়ে তাদের বাসায় আসতে বলে। এরপর আমি আপার বাসায় আসি। আসার পর আমার আপা আমাকে দুলাভাইয়ের বিষয়ে বিচার দেয়। এক মেয়ের সঙ্গে দুলাভাইয়ের ছবি। এরপর আপা আমাকে মোবাইল ফোনে থাকা দুলাভাইয়ের সঙ্গে অন্য মেয়ের ছবি দেখায়। এরপর আমার সামনেই তাদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।’
তাহেরা আরও বলেন, ‘এ সময় দুলাভাই বারবার আপাকে খুন করার কথা বলে হুমকি দেয়। রাত ৮টার দিকে দুজন না খেয়ে শুয়ে পড়লে আমি নিজের বাসায় চলে আসি। এরপর আমি আজ ডিউটি শেষ করে দুপুরের দিকে আপার বাসায় গিয়ে দেখি মেঝেতে আপার মরদেহ পড়ে রয়েছে। ঘরে দুলাভাই ও দেড় বছর বয়সী শিশুকন্যা জান্নাত নেই। এরপর দুলাভাইয়ের মোবাইল ফোনে কল দিলে মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। দুলাভাইয়ের গতকালের হুমকি সঙ্গে মিলে গেছে। আপাকে শ্বাসরুদ্ধ করে শিশুকন্যা নিয়ে পালিয়ে গেছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল আমিন বলেন, ‘স্থানীয় এনামুল হকের ভাড়া বাসায় একজনকে মেরে ফেলে রেখে গেছে তার স্বামী। এমন খবর শুনে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। এসে দেখি ঘরের মেঝেতে নারীর মরদেহ পড়ে রয়েছে। স্বামী পলাতক রয়েছে। অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ সবাই কমবেশি জানতেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায় ঝগড়া হতো। প্রতিবেশীরা গিয়ে সমস্যা সমাধান করত। ধারণা করা হচ্ছে এসব বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাঁটির একপর্যায়ে স্ত্রীকে খুন করে পালিয়ে যায় স্বামী।’
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কুমার কর বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। স্ত্রী মরদেহ ঘরের মেঝেতে ফেলে স্বামী শিশুকন্যাকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।