জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা বিবিরবিলা এলাকার বিবিবিলা শান্তি বৌদ্ধ বিহার ভাঙচুর করা হয় রকি বড়ুয়ার নির্দেশেই। চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য দেন রকি বড়ুয়ার বিশ্বস্ত সহযোগী কামাল উদ্দিন।
সম্প্রতি সাঈদীপুত্রের সঙ্গে গোপন বৈঠক করে দেশজুড়ে আলোচনায় আসেন এই রকি বড়ুয়া।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে কামাল উদ্দিন জানান, মন্দির ভাঙচুরের পরিকল্পনা হয় রকি বড়ুয়ার বাড়িতেই। এ বিহার ভাঙচুরের পুরো ঘটনার সঙ্গে রকি বড়ুয়ার ১৫-২০ জন সহযোগী জড়িত থাকলেও বৌদ্ধ বিহার ভাঙচুর কাজে মূলত তিনজন অংশ নেন। অন্যরা ভাঙচুর কাজের সহযোগী ও পাহারাদারের কাজের দায়িত্ব পালন করেন।
কামাল উদ্দিন জানান, পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের সঙ্গে বিরোধকে ধর্মীয় সংঘাতে রূপ দিয়ে ফায়দা লুটতে পরিকল্পনা করেন রকি বড়ুয়া। ঘটনার আগে গত ৩ মে দিবাগত রাতে রকি বড়ুয়ার বাড়িতেই বিহার ভাঙচুরের পরিকল্পনা এবং এতে কারা অংশ নেবেন, তা নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ভোর ৩টা থেকে ৪টার মধ্যেই বৌদ্ধ বিহার ভাঙচুর চালানো হয়। এ ছাড়া ৪ মে বৌদ্ধ বিহারে হামলার ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক সংঘাতে রূপ দিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অনুসারীদের দিয়ে ব্যাপকভাবে গুজব ছড়াতে থাকেন রকি বড়ুয়া।
গত ৪ মে ভোরে লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা বিবিরবিলা এলাকায় বৌদ্ধ বিহারে ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় রকি বড়ুয়ার বাবা জয়সেন বড়ুয়া মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া কামাল উদ্দিন গতকাল শনিবার আদালতে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে লোহাগাড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল ইসলামের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে আসামি কামাল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের মধ্যম রাজঘাটা এলাকার জাফর আলমের ছেলে।
মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনায় জয়সেন বড়ুয়া বাদী হয়ে মৌলভী হেলাল উদ্দিন ও জামাল উদ্দিনসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছিলেন। শুক্রবার রাতে আমরা হামলার সঙ্গে জড়িত কামাল উদ্দীন নামের একজনকে গ্রেপ্তার করি। শনিবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারামতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন কামাল উদ্দীন।’
তদন্ত কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘কামাল উদ্দীন হামলায় জড়িতদের নাম জানিয়েছে। আমরা তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। অস্ত্র-মাদকসহ র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা রকি বড়ুয়াকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’
জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকের হোসাইন মাহমুদ বলেন, ‘আদালতে আসামি কামাল উদ্দিনের দেওয়া জবানবন্দীর মাধ্যমে বৌদ্ধ বিহার ভাঙচুরের বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেছে। আসলে অপরাধ করে খুব বেশি দিন টিকে থাকা যায় না। এ ঘটনায় জড়িত কেউ রেহাই পাবে না। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
সূত্র : দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।