জুমবাংলা ডেস্ক: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ‘স্বৈরতন্ত্র আর সুশাসনের অভাবের কারণে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যায়না। সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে যা চলছে তাতে গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়। নোয়াখালীর বসুরহাটের মত সারাদেশেই অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষমতার ভারসাম্যহীনতাই দেশে দুর্নীতি ও দুঃশাসন জন্ম দিয়েছে।’
দেশে নির্ভেজাল গণতন্ত্র জরুরী হয়ে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে সড়ক ও জনপথ বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার এনায়েতুর রহমানের নেতৃত্বে বিভিন্ন দলের অর্ধশত নেতা-কর্মী আজ দুপুরে জাতীয় পার্টিতে যোগদানের সময় জি এম কাদের এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘১৯৯১ সালে পল্লীবন্ধু রাষ্ট্র ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকে দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে স্বৈরতন্ত্র চলছে। বিএনপি ক্ষমতায় বসে দুর্নীতি ও দলীয় করণের মাধ্যমে দেশে বৈষম্য সৃষ্টি করেছে, যা এখনো চলছে।
তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানীদের বৈষম্যের প্রতিবাদে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিলো। এখন ক্ষমতাসীন দল না করলে চাকরি মেলেনা, ব্যবসা-বানিজ্য করা যায় না। ক্ষমতাসীনরা টেন্ডারবাজী, দলবাজী, চাঁদাবাজী করে দেশের মানুষের শান্তি হরণ করেছে। ৯১ সালের পর থেকে শুধু লুটপাটের রাজনীতি শুরু হয়েছে, রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হচ্ছে।’
বিরোদলীয় উপনেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির টেন্ডারবাজী, দলবাজী, দুর্নীতি, দুঃশাসন, বৈষম্য আর নির্যাতনে স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা ভুলণ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে মূল্যায়ন করলে মনে হচ্ছে ৯১ সালের পর থেকে দেশের মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ পাচ্ছেনা। তাই স্বাধীনতার সুফল দেশের মানুষের মাঝে পৌঁছে দিতে নতুন করে সংগ্রাম শুরু করেছে জাতীয় পার্টি।’
সবাইকে জাতীয় পার্টির পতাকা তলে যোগ দিতে উদাত্ত আহবান জানান জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তুলনায় জাতীয় পার্টির শাসনামলে দেশের মানুষ বেশি সুশাসন ভোগ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘জেলেরা বাজারে মাছ বেঁচতে গেলে স্থানীয় আওয়ামী লীগকে চাঁদা দিতে হয়। রাস্তায় হকাররা দোকান করতে পুলিশের সাথে ছাত্রলীগকেও চাঁদা দিতে হয়।’
জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘দেশের মানুষ ভালো নেই। ১৯৯১ সালের পর বিএনপি হাওয়া ভবন সৃষ্টি করে যে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের চালু করেছিলো, তা গেলো ১২ বছরে আরো সম্প্রসারিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মানুষের মানবাধিকার খর্ব করেছে। বর্তমান সরকার মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, মানুষের বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কার্টুনিস্ট কিশোর আর লেখক মুশতাককে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হয়েছে। মুশতাক কারাগারেই মারা গেছেন। দেশে আইনের শাসন নেই তাই প্রতিদিন ধর্ষণ হচ্ছে কিন্তু নির্যাতিতরা বিচার পাচ্ছেনা।’
স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠান আন্দোলনে শরীক হতে সবাইকে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিতে আহবান জানান জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু।
এসময় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লেফটেনেন্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘জাতীয় পার্টি সব চেয়ে সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক দল, তাই প্রতিদিনই বিশিষ্টজনরা জাতীয় পার্টিতে যোগ দিচ্ছেন। আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আত্ম প্রকাশ করবে। জাতীয় পার্টির এগিয়ে চলায় কেউ বাঁধা সৃষ্টি করতে পারবেনা।’
কক্সবাজার জেলা চকোরিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক কফিল উদ্দিনও এসময় জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।