জুমবাংলা ডেস্ক : অফিসে কর্মরত অবস্থায় মৃ’ত্যু হওয়ার আগে ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল সেই ব্যাংক কর্মকর্তার। অবিবাহিত গহর জাহান নামের ওই ব্যাংকারের ভাই জানান, অনেকদিন আগে ভারতে গিয়ে ওপেন হার্ট সার্জারি করেছিলেন গহর। ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে শুনলে বিয়ে ভেঙে যেত। তাই বিয়ে করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই নারীর মৃ’ত্যু হয়েছে।
গহর জাহানের পরিবার জানায়, গহরের ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছিল। এই অবস্থায়ই ব্যাংকে নিয়মিত কাজ করছিলেন তিনি। অবিবাহিত গহরের বড় ভাই মারুফ নেওয়াজের বাসায় থাকতেন। তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটের পরিচালক।
মারুফ নাওয়াজ বলেন, অনেকদিন আগে ভারতে গিয়ে ওপেন হার্ট সার্জারি করেছিলেন গহর। মা’রা যাওয়ার কয়েকদিন আগেও ভারতের সেই চিকিৎসক গহরকে ফের চেকআপের জন্য ভারত যেতে বলেন। সময় না পেলে যে কোনো ভালো জায়গায় হার্ট চেকআপ করতে বারবার অনুরোধ করেন তিনি। কিন্তু আর যাওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, ওপেন হার্ট সার্জারি হয়েছে শুনলে বিয়ে ভেঙে যেত। তাই বিয়ে করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন গহর। তিনি ভাই নাওয়াজের সন্তাদের নিজের সন্তানের মতো যত্ন নিতেন। গহর ওপেন হার্ট সার্জারি রোগী ছিলেন। চিকিৎসক জানিয়েছেন, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই নারীর মৃ’ত্যু হয়েছে। এ ধরনের মৃ’ত্যু অনেকেরই হতে পারে।
হৃৎস্পন্দন বন্ধ হলে বা কমে গেলে কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাস সাময়িক কমে গেলে তাকে সিপিআর দিয়ে সহায়তা করা যায়।
কার্ডিও-পালমোনারি রিসাসিটেশন বা সিপিআর জীবন রক্ষাকারী একটি কৌশল। হার্ট অ্যাটাক বা বিভিন্ন কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হলে জরুরি প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে সিপিআর দেয়াটা বিশ্বজুড়ে প্রচলিত।
গহরের মৃ’ত্যুর সেই ভিডিওতে আমরা দেখতে পাই, উত্তরায় ব্যাংকে কাজ করা ওই কর্মকর্তা অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলে সহকর্মীরা তাকে উঠে বসানোর চেষ্টা করলেও প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে কেউ এগিয়ে আসেনি। নারী সহকর্মী শুশ্রূষার চেষ্টা করছিলেন তাদের কেউ সিপিআর দেননি।
বিখ্যাত হৃদরোগ চিকিৎসক ড. দেবী শেঠি বলেছেন, হার্ট এটাকের রোগীকে সিপিআর না দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া আর কফিন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া একই কথা। এখানেও তাই হয়েছে।
এ বিষয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের অধ্যাপক ডা. এটিএম খলিল বলেন, সিপিআর যে শুধু হার্টের রোগীদের দেয়া হয় বিষয়টি তা নয়। পানিতে পড়লে, ইলেকট্রিক শর্টে আহত হলে বা যে কোনো কারণে কোনো মানুষ যদি কলাপস করে তবে তাকে সিপিআর দেয়া যেতে পারে। এটাকে আমারা বলি প্রাথমিক চিকিৎসা।
গত সোমবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে কর্মস্থলেই মা’রা যান গওহর। প্রাইম ব্যাংকের উত্তরার জসীমউদদীন রোড শাখা কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে তার মৃ’ত্যুর দৃশ্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি। এই নারীর মৃ’ত্যুতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শোক জানিয়েছেন অনেকে।
প্রসঙ্গত, গহরের বয়স হয়েছিল ৪৩ বছর। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহী শহরের মহিষবাথান এলাকায়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করে ২০০১ সালে ব্যাংকের চাকরিতে যোগ দেন গহর। অবিবাহিত গহর জাহান বড় ভাই মারুফের উত্তরার বাসায় থাকতেন।
তার বাবা মৃ’ত মাওলানা নাওয়াজ ছিলেন পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তা। বৃদ্ধা মা নুরজাহান বেগম মেয়ে হারিয়ে শোক কাটিয়ে উঠতে পারছেন না।
https://www.facebook.com/bangladesh24online1/videos/462456671007684/
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।