নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে দেশ স্বাধীকার আন্দোলনে তারা এগিয়ে এসেছিলেন। পাক হানাদারদের এদেশ থেকে বিতারিত করে বিশ্ব মানচিত্রে জায়গা করে নেয় বাংলা নামের একটি দেশ হিসেবে। সেও আজ থেকে প্রায় ৪৯ বছর আগের কথা। কিন্তু দেশ স্বাধীকার আন্দোলনে যাদের ভূমিকা সেই বীর মুক্তিযোদ্ধারা তো আর দেশের খারাপ কোন পরিস্থিতিতেই বসে থাকতে পারেন না। তাই দেশের বর্তমান বিরাজমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতেও তারা বসে থাকতে পারলেন না। এবারও তারা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে সাড়া দিয়ে দেশের এই করোনা যুদ্ধে নেমেছেন। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস যখন মহামারী আকার ধারণ করেছে তখন বাংলাদেশও এ মহামারী থেকে বাদ যায়নি।
ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আর এই লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দিন আনে দিন খায় কর্মক্ষম মানুষগুলো। কিন্তু সরকার সেই মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে নানা ধরণের খাদ্য সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরকারের পাশাপশি সমাজের বিত্তবান মানুষকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী ডাকে তাই নানা প্রতিষ্ঠান ও ব্যাক্তি এগিয়ে আসে। তেমনি গাজীপুরের কালীগঞ্জে এগিয়ে এসেছেন ’৭১ এর রণাঙ্গনের দুই বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত হোসেন খান ও নাজিমউদ্দিন খান।
তারা নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকায় নিজ এলাকা বক্তারপুর ইউনিয়ন ফুলদী গ্রামের দেড়শ অসহায় হতদরিদ্র ও কর্মহীন পরিবারের মাঝে খাদ্য সহায়তা দিলেন। দুই মুক্তিযোদ্ধার ভাতার টাকায় পুরোপুরি সম্ভব না বলে আর্থিক সহায়তায় ওই রণাঙ্গনের দুই যোদ্ধার সাথে এগিয়ে আসে তাদের পরিবারের সদস্যরাও।
শনিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে দেড়শ কর্মহীন অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের ঘরে ঘরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. সাজ্জাদ হোসেন খান রিপন ও সোহেল হাসিম খান পৌঁছে দেন। এসব খাদ্য সহায়তার মধ্যে ছিল- ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ২ কেজি আলু, ১ লিটার তেল, ১ কেজি ছোলা ইত্যাদি। এছাড়াও নিয়মিত হাত ধোয়ার জন্য ছিল সাবান। এ সময় সাবেক ইউপি সদস্য মো. কবির হোসেন ও স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শামীম রানা উপস্থিত ছিলেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত হোসেন খান ও নাজিমউদ্দিন খান বলেন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশ স্বাধীকার আন্দোলনে এগিয়ে এসেছিলাম। সেটা ছিল পাক হানাদারদের বিরুদ্ধে দেশকে রক্ষার লড়াই। কিন্তু বর্তমানে দেশে মহামারী আকার ধারণ করা করোনাভাইরাস থেকে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে রক্ষা করা আমাদের সকলেরই দায়িত্ব। তাই করোনা থেকে দেশকে বাঁচাতে এবার আমরা শেখের বেটির ডাকে সারা দিলাম।
তারা আরো বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির মহিলা বিষয়ক বিষয়ক সম্পাদক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবং ওই মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্ব স্ব অবস্থান থেকে কর্মহীন অসহায় নি¤œ আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। তাই নিজেদের মুক্তিযোদ্ধা ভাতার টাকা এবং আমাদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তায় সরকারের নির্দেশনা মেনে যারা ঘরে আছেন সেই কর্মহীন মানুষগুলোর খাদ্য সহায়তায় এগিয়ে এলাম।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।