জুমবাংলা ডেস্ক: রাজশাহীতে ৪৫ লাখ টাকা ভরণপোষণের দাবিতে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন এক নারী।
৪৬ বছর পর নিজের ও দুই সন্তানের ভরণপোষণের দাবি করে রাজশাহীর পারিবারিক আদালতে মামলা করেছেন তিনি।
ওই নারীর দাবি, ৪৬ আগে দুই সন্তানসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তার স্বামী।
মামলা দায়ের করা নারীর নাম শবনাম বেগম। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার থানাপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। তার দুই সন্তান আদিল হোসেন ও আরিফুল ইসলাম। তার স্বামী আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার খোর্দ্দগোবিন্দপুর গ্রামে।
মামলার আরজিতে শবনাম বেগম উল্লেখ করেন, ১৯৭৭ সালে নাবালক দুই সন্তানসহ তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন তার স্বামী রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার খোর্দ্দগোবিন্দপুর গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস।
১৯৬৬ সালে আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে শবনাম বেগমের বিয়ে হয়। বিয়েতে দেনমোহর ধার্য করা হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। এ দেনমোহরের মধ্যে ২শ টাকার গয়না দেওয়া হয়েছিল। বকেয়া ছিল ১৯ হাজার ৮শ টাকা।
সংসার জীবনে তাদের দুই ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলে আদিল হোসেনের জন্ম হয় ১৯৬৮ সালে, ছোট ছেলে আরিফুল ইসলামের জন্ম ১৯৭৫ সালে। ১৯৭৭ সালে এই দুই নাবালক সন্তানসহ শবনাম বেগমকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। সেই থেকে তাদের কোনো খোরপোষ (ভরণপোষণ) দেওয়া হয়নি।
আরজিতে আরও বলা হয়েছে, স্বামীর সঙ্গে শবনাম বেগমের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক বিদ্যমান। গত ২০ আগস্ট সন্তানদের বাবা আব্দু্র কুদ্দুসকে বাড়ির কাছে পেয়ে শবনাম বেগম তাদের ভরণপোষণ দাবি করেন। তিনি ভরণপোষণ দেবেন না বলে জানালে সম্প্রতি শবনাম মামলা করেন। কারণ, খোরপোষ দেওয়ার মতো যথেষ্ট আর্থিক সক্ষমতা আছে আব্দুল কুদ্দুসের।
আরজিতে শবনাম বেগম নিজের ৬শ মাসের খোরপোষ দাবি করেছেন। প্রতি মাসের ৫ হাজার টাকা হিসাবে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ লাখ টাকা। বড় ছেলে আদিল হোসেনের ১০৮ মাসের (৯ বছরের) একই হারে ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ছোট ছেলে আরিফুল ইসলামের ১৯২ মাসের (১৬ বছরের) ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা খোরপোশ দাবি করা হয়েছে। এতে মোট খোরপোষের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ লাখ টাকা।
জানতে চাইলে শবনাম বেগম গণমাধ্যমকে বলেন,আমি পৈতৃক ভিটায় একটি জরাজীর্ণ বাড়িতে থাকি। ছোট ছেলে একটি ছোট মুদি দোকান চালান। এ দিয়ে কোনো রকমে দিন কাটাছেন। আমার বয়স হয়েছে। এখন আর এভাবে চলতে পারছি না। বাধ্য হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
জানতে চাইলে শবনাম বেগমের আইনজীবী হজরত আলী বলেন, বিবাদীকে আদালতে জবাব দিতে হবে। সেই অনুযায়ী আদালতে রায় দেবেন।
তবে বিবাদী আব্দুল কুদ্দুস দাবি করে বলেন, স্ত্রীর আচরণের কারণে ৪৬ বছর আগে তালাক দিয়েছি। সেই সাক্ষী এখনো আছেন। বিয়েতে ৫০১ টাকা দেনমোহর ছিল। সেটা শোধ করে দিয়েছি। নাবালক অবস্থায় দুই সন্তানের খোরপোষ দিয়েছি। ৪৬ বছর পর আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।