সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা সিএনজি মালিক সমিতির নেতাদের বিরুদ্ধে হরিরামপুর থানা পুলিশ ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে সিএনজি চালকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা টু মানিকগঞ্জ সড়কে প্রায় ১১০টি সিএনজি চলাচল করে। প্রতিটি সিএনজি গাড়ী থেকে শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে দৈনিক ৪০ টাকা এবং হরিরামপুর থানা পুলিশের নামে প্রতি মাসে ৪০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয় এবং নতুন করে কোন গাড়ী স্ট্যান্ডের সিরিয়ালের জন্য ভর্তি হতে আসলেই ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে জমা দিতে হয়। এসব টাকা আদায় করার জন্য নির্ধারিত লোক রয়েছে। নির্ধারিত হারে চাঁদা না দিলে কারো পক্ষে স্ট্যান্ড ব্যবহার ও গাড়ি চালানো সম্ভব হয়না। চালকরা স্বেচ্ছায় চাঁদা দিতে না চাইলে ভয়ভীতি দেখিয়ে সিএনজির চাবি কেড়ে নেয় স্ট্যান্ডের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত এসব শ্রমিক নেতারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সিএনজি চালক জানান, সুজন, মিলন ও মনাসহ কয়েকজন মিলে প্রতি মাসে আমাদের কাছ থেকে থানা পুলিশের কথা বলে প্রতিটি সিএনজি থেকে ৪০০ টাকা ও শ্রমিক কল্যাণ তহবিলের নামে প্রতিদিন ৪০ টাকা করে চাঁদা নেয়। প্রথম অবস্থায় রাস্তায় গাড়ি নামাতে হলে ৫ থেকে ৮ হাজার পর্যন্ত টাকা নেয় তারা। এই টাকা না দিলে আমাদের গাড়ি চালাতে দেয়না। আমরা কয়েকবার বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। চাঁদা না দিতে চাইলে আমাদের পুলিশের ভয়ভীতি দেখায় তারা। স্ট্যান্ডে আমাদের গাড়িও রাখতে দেয়না। আমরা গরিব মানুষ। এত টাকা চাঁদা দিতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। পেটের দায়ে গাড়ি চালাই, বাধ্য হয়েই চাঁদা দিতে হয়।
সিএনজি স্ট্যান্ডের চাঁদা তোলার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে সিএনজি মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, ঝিটকা সিএনজি স্ট্যান্ডে আমাদের সময় গাড়ি অনেক কম ছিল। এখন গাড়ি অনেক বেশি। আমি আগে সভাপতি ছিলাম এজন্য আমাকে চাঁদা দিতে হয়না। আমি ব্যতিত সবাইকে চাঁদা দিতে হয়।
সিএনজি মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিলন বলেন, আমি শুনেছি প্রতিটি সিএনজি থেকে প্রতিমাসে ৪০০ টাকা ও প্রতিদিন ৪০ টাকা করে নেওয়া হয়। বর্তমানে সিএনজি স্ট্যান্ডের সব দ্বায়িত্বে আছে সুজন। সুজনই এসব টাকা নেয়।
সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি সোবাহান বলেন, আমি আগে দ্বায়িত্বে ছিলাম, এখন দ্বায়িত্বে নাই। বড় ভাইয়েরা আমাকে সাইড করে দিয়েছে। এখন দ্বায়িত্বে আছে সাধারণ সম্পাদক মিলন। আমি দ্বায়িত্বে থাকার সময় ৩০ টাকা করে জিপি নেওয়া হতো। মাসে ৪০০ টাকা চাঁদা নেওয়ার বিষয়টা বর্তমানে যারা দ্বায়িত্বে আছে তারা করেছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুজনের মুঠোফোনে ফোন দিয়ে চাঁদা আদায়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতেই পরে ফোন দিচ্ছি বলে ফোন কেটে দেন। পরে তার মুঠোফোনে বার বার ফোন দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মুঈদ চৌধুরী বলেন, চাঁদা আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছ থেকেই শুনলাম। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। কেউ অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করলে তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।