জুমবাংলা ডেস্ক : ভর্তি হতে না পেরে ও চিকিৎসা না পেয়ে গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গেটে সন্তান জন্মের ঘটনায় তদন্তে নেমেছে স্বাস্থ্য বিভাগের গঠিত পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি।
ইতোমধ্যে দুই কমিটির ৬ সদস্য সরেজমিনে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন। এক সপ্তাহের মধ্যে কমিটিকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) বিকেলে গাইবান্ধার সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জন ডা. এবিএম আবু হানিফ জানান, ভর্তি ও চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতালের গেটে সন্তান জন্মের অভিযোগ তদন্তে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরমধ্যে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষে সদর উপজেলা স্বাস্থ ও প. প. কর্মকর্তা ডা. গোলাম মেস্তাফাকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি এবং জুনিয়র কনসালটেন্ট গাইনি ডা. শামীমা বেগমের নেতৃত্বে ৩ সদস্য বিশিষ্ট অপর তদন্ত কমিটি করেছে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। কমিটি ইতোমধ্যে সরেজমিনে অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে।কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর কারো অবহেলা থাকলে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে, সন্তান জন্মের পর রাতেই প্রসূতিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে রংপুর মেডিকেলে কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েই সাদুল্লাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও কর্তৃপক্ষ দায় সারেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী পরিবার।
শিশুর বাবা বাদশা মিয়া বলেন, রংপুর মেডিকেলে ভর্তির পর রাতভর এবং পরের দিন বিকেল পর্যন্ত কোনো চিকিৎসক তাদের দেখেননি। উল্টো হাসপাতালে দালালদের খপ্পরে পড়ে টাকা খরচ করতে হয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে গাড়ি ভাড়া করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বাড়ি ফেরেন তিনি। বাড়িতে আসার পরেও কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি বলেও অভিযোগ বাদশা মিয়ার।
হাসপাতালে সেবার পরিবর্তে যে আচরণ এবং হয়রানি করা হয়েছে তাদের সঙ্গে তার জন্য জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানান তিনি।
যদিও ভুক্তভোগীর এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহিনুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘রংপুরে পাঠানোর পরেও প্রসূতি মাসহ জন্ম নেওয়া সন্তানের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মা ও সন্তান সুস্থ রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ঈদের দিন গত (২৫ মে) বিকালে সাদুল্লাপুর উপজেলা জামুডাঙ্গা (বাঁধের মাথা) গ্রামের দরিদ্র বাদশা মিয়ার স্ত্রী রাশেদা বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে তাকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্বজনরা। কিন্তু সেখানে দায়িত্বরত সেবিকা বাসনা রাণী, অফিস সহায়ক শিল্পী রাণী ও জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মিঠুন কুমার বর্মণ প্রসূতিকে ভর্তি না করে গাইবান্ধা হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। বারবার অনুরোধ করলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি উল্টো করোনার ভয় দেখানো এবং বিভিন্ন উল্টাপাল্টা বুঝিয়ে হাসপাতাল থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়। পরে নিরুপায় হয়ে প্রসূতিকে নিয়ে হাসপাতালের গেটে আসেন স্বজনরা। এসময় প্রসব বেদনায় ছটফট করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন রাশেদা। পরে সেখানে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন রাশেদা।
এদিক এমন অমানবিক ঘটনায় তাৎক্ষণিক বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে স্থানীয়রা। ঘটনার সাথে জড়িত অভিযুক্তদের বিচার দাবি করে বিক্ষোভ করেন তারা। তবে এই ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কর্তব্য অবহেলায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি সাদুল্লাপুরের সচেতন মহলের।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



