আর রাজী: আমি অনেক রুচিশীল, সুরুচির পরাকাষ্ঠা আমি! আমি ছায়ানট, আমি থিয়েটার, আমি শান্তি নিকেতন, আমি অক্সফোর্ড, আমি প্রথম আলো, আমি চারুকলা, আমি মানুষের জন্য, আমি হলিউড, আমি বিশ্বব্যাংক, আমি সুরুচির প্রতীক!
আমি যাই হই না কেন, আমি যত রুচিশীল হই না কেন, আমি ভুলে যেতে পারি না যে এই দেশ, এই সমাজ, এই সংস্কৃতি যতটুকু আমার, ঠিক ততোটুকু হিরো আলমেরও। হিরো আলম আমারই ভাই। নিজের ভাইয়ের রুচি নিয়ে প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলা, তাকে রুচিহীনতার প্রতীক সাব্যস্ত করা সুরুচির পরিচয় বহন করে?
যদি এ দেশে “রুচির দুর্ভিক্ষ্য” থেকেও থাকে তার দায় আর সবার মতো আমারও।
“ওরে ভাই, কার নিন্দা কর তুমি।
মাথা করো নত।
এ আমার এ তোমার পাপ।”
ভুলে গেলেন সে কথা? এই অবিমৃষ্যকারিতা বিভৎস্য রুচিহীনতার স্মারক তা কি বুঝতে পারেন না? এই আপনাদের রুচিজ্ঞানের বহর?
যে প্রকাশ্যে তার ভাইয়ের নিন্দা করে সে তো মৃতভাইয়ের মাংস ভক্ষণকারী! না কি হিরো আলমকে আপনার ভাই স্বীকার করতে কুণ্ঠিত আপনি? ছি! এতোই আপনাদের রুচির বড়াই!
“কত বড় আমি, কহে নকল হীরাটি তাই তাে সন্দেহ করি নহ ঠিক খাটি।”
আজ পর্যন্ত এই পৃথিবীতে যত দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে তা রুচির, শিক্ষার, জ্ঞানের বড়াইকারীরাই করেছে৷ পৃথিবীটা তখনই নরক হয়েছে যখন কেউ কেউ ভেবেছে যে তারা অধিকাংশের চেয়ে সেরা আর তাদের মতোই সেরা, রুচিবান করে গড়ে তুলতে হবে বাকি সব্বাইকে! এরা নিজেদের রুচির স্বর্গে একা একা থাকতে ক্লান্ত বোধ করেন, তাই তারা সঙ্গী চান, অগণিত সঙ্গী। আর এই চাওয়া পুরণ করতে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে ছোট করা, হেয় করার মধ্য দিয়ে তাদের মধ্যে ঊণমানুষের বোধ ঢুকিয়ে দিতে পারাকেই তারা রুচিশীলতার চর্চা জেনে আত্মরতিতে ভোগেন!
ভাই, আপনার রুচি নিয়া আপনি স্বর্গ গড়েন; আমারে, আমার ভাই হিরো আলোমরে আমাদের মতো থাকতে দেন। দোহাই আপনাদের, হিরো আলমদের নিয়া আপনাদের মাথা না ঘামাইলেও চলবে। আপনাদের রুচি নিয়া প্রশ্ন তুলতে যায় না তো হিরো আলমরা! আপনাদের রুচির দূর্গে হানা দেওয়ার সাধ্য হিরো আলমদের নাই। ভিক্ষা দরকার নাই, আপনারা আপনাদের জিহ্বা সামলান।
বিঃদ্রঃ আসল কথা বলার হিম্মত নাই, তাই এইসব ঝুঁকিহীন গান গাই।
লেখক: শিক্ষক, যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।