জুমবাংলা ডেস্ক : প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে নামের প্রস্তাব পাঠাতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য এক দিন সময় বাড়ানো হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নাম পাঠানো যাবে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি, গণতন্ত্রী পার্টিসহ কয়েকটি দল নাম জমা দিয়েছে। আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলীয় জোটের শরিক অন্যান্য দল আজ নাম জমা দেবে বলে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করে আরো অর্ধশতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। এ নিয়ে গত তিন দিনে তিন শর বেশি মানুষ ই-মেইলে ও হাতে হাতে আবেদন পাঠান। এর মধ্যে সাবেক বিচারপতি, সেনা কর্মকর্তা, সচিব, যুগ্ম সচিব, সাংবাদিক, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ রয়েছেন।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, কর্মকর্তারা বেশ ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাঁরা বিভিন্ন আগ্রহী প্রার্থীর আবেদন গ্রহণ করছেন। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, বিকেল পর্যন্ত ৬০ জন বিশিষ্ট নাগরিককে সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটির সঙ্গে বৈঠকের আমন্ত্রণ সংবলিত চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কাল শনিবার ও আগামী রবিবার বৈঠকের কথা রয়েছে।
এর আগে গত বুধবার নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনারের নাম পাঠাতে চিঠি দেওয়া হয়। জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম বলেন, তাঁরা বৃহস্পতিবার ১০ জনের নাম জমা দিয়েছেন।
আ. লীগ আজ দিচ্ছে, বিএনপি দেবে না : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আজ সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে অনুসন্ধান কমিটির কাছে নাম প্রস্তাব করবে। তবে রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আগে থেকেই বলে আসছে, এই অনুসন্ধান কমিটিতে তারা কোনো নাম প্রস্তাব করবে না।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ গতকাল বলেন, ‘আমাদের তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। কাল (আজ শুক্রবার) আমরা তালিকা জমা দেব। ’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী গতকাল বলেন, নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চিঠি এসেছে। তবে তাঁদের দল নাম প্রস্তাব করবে না, এটা স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত। দুই দিন আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলন করেও বলেছেন, তাঁরা কোনো নাম প্রস্তাব করবেন না।
২০ দলীয় জোটসহ সমমনা দলগুলো নাম দিচ্ছে না : বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও সমমনা দলগুলো অনুসন্ধান কমিটিতে নামের তালিকা দিচ্ছে না। এর মধ্যে রয়েছে গণফোরাম, বাংলাদেশ ন্যাপ, কল্যাণ পার্টি, এলডিপি, জেএসডি, মুসলিম লীগ ও ইসলামী আন্দোলন।
ট্রেলারেই তুমুল ঝড় তুলল ‘রেডরাম’, মুক্তি আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাননি। সার্চ কমিটিতে নাম দেওয়ার প্রয়োজনই মনে করেন না।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নিলেও তিনি সার্চ কমিটির কাছে কোনো নাম প্রস্তাব করবেন না।
নাম পাঠাচ্ছে না বাম দলগুলোও : বাম দলগুলোর মধ্যে রয়েছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, সিপিবি, বাসদ ও গণসংহতি আন্দোলন। বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, নাম দেওয়া আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। এই কমিটির মাধ্যমে সরকারের অনুগ্রহপ্রাপ্ত ও প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করবেন রাষ্ট্রপতি।
সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, কোনো আনুষ্ঠানিক নাম পাঠানো হবে না। বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ মনে করেন, নাম প্রস্তাব অপ্রয়োজনীয়।
১৪ দল নাম জমা দিচ্ছে : ১৪ দলের দুই শরিক জাসদ ও গণতন্ত্রী পার্টি নাম প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে জাসদ ১০ জন ও গণতন্ত্রী পার্টি চারজনের নামের তালিকা দিয়েছে। জোটের অন্য দলগুলোও তালিকা প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে। তারা আজ তালিকা সার্চ কমিটির কাছে জমা দেবে।
১৪ দলের একাধিক শরিক দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বলেন, নির্বাচন কমিশনার হতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাবিত তালিকায় নাম দিতে অনেকের মধ্যে প্রতিযোগিতা যেমন আছে, তেমনি অনাগ্রহীর সংখ্যাও কম নয়। অনেকেই তাঁদের নাম প্রস্তাব করতে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষেধ করছেন। দলীয় রাজনীতির প্রতি প্রবল আনুগত্য আছে, এমন ব্যক্তিরাই নির্বাচন কমিশনার হতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
অনাগ্রহের কারণ হিসেবে শরিক দলের নেতারা মনে করেন, বাংলাদেশের মতো একটি দেশে নির্বাচন কমিশন বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। এ নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রবল চাপ সামাল দিতে হবে। এ ছাড়া কমিশনের প্রতি ইউরোপ, আমেরিকার দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গিও অনাগ্রহের একটা কারণ।
তবে প্রস্তাবিত তালিকায় নাম দিতে কিছু ব্যক্তির অনাগ্রহ থাকাটা কোনো সমস্যা নয় বলে মনে করেন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বলেন, ‘কেউ আগ্রহী না হলে তাঁর নাম তালিকায় দেব না। বাংলাদেশে আগ্রহী লোকের তো অভাব নাই। ’
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘বিচারিক ব্যবস্থা, প্রশাসনিক কাজে দক্ষতা, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা—এ তিনটি বিষয় মাথায় রেখে আমরা নাম প্রস্তাব করব। ’
জোটের অন্যান্য দলের মধ্যে রয়েছে সাম্যবাদী দল, ন্যাপ, তরীকত ফেডারেশন ও জাতীয় পার্টি (জেপি)।
সূত্র : কালেরকণ্ঠ।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।