জুমবাংলা ডেস্ক : একটি গাছের চারদিক ঘিরে অনেকগুলো মানুষ। কেউ কেউ যেন ভয়ে আতঙ্কিত। যদি মৌমাছিরা ক্ষেপে যায়। তবে রক্ষা নেই। কেউ কেউ আবার মৌচাক গণনা করে ব্যস্ত। কেউ কেউ আবার মৌচাকগুলির সৌন্দর্য নিয়ে কল্পনা-জল্পনা করছে।
ঘটনাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার সোনাজল এলাকার। ভোলাহাটে বিলের রাস্তার পাশেই বিরাট একটি পাইকড়ের গাছে প্রায় অর্ধশতাধিক মৌচাক বেঁধেছে মৌমাছিরা। একসঙ্গে এতগুলো মৌচাক দেখার জন্য প্রতিদিনই এই গাছটির কাছে ভিড় করছেন উৎসুক জনতা।
এমনই দৃশ্যের দেখা মেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার কানসাট-ভোলাহাট সড়কের সোনাজল এলাকায়। এই পাইকড়ের গাছটি দেখভাল করেন গাছ সংলগ্ন ওই এলাকারই সেভেন স্টার নামের একটি ইট ভাটার মালিক ও কর্মচারীরা। তাদের দাবি, প্রত্যেক বছরের ৫-৬ মাস এখানে মৌমাছির বিচরণ থাকে।
জানা যায়, বিলে শত শত হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করছেন কৃষকরা। ওই সরিষার ক্ষেত থেকে মৌমাছিরা মধু আহরণ করে নিয়ে আসে। ফলে মৌমাছির গুনগুন ধ্বনিতে গাছতলা ও আশপাশ মুখরিত হয় সবসময়। রাস্তার পাশে পাইকোড়ের গাছটিতে রয়েছে ৫০টিরও বেশি মৌচাক।
সাধারণত মৌমাছিরা ৫-৬ মাসের জন্য গাছটিতে বাসা বাঁধে। আবার যখন আম গাছে মুকুল ফোটার সময় হলে এলাকায় গিয়ে চাক গড়ে তোলে। সেভেন স্টার ইট ভাটার মালিক রাফিজুল হক ডাবলু বলেন, গত ১০ বছর ধরে আমরা দেখছি এ গাছটিতে মৌমাছিরা চাক তৈরি করে আসছে। বড়ইফুল আসার সময় মৌমাছিরা এখানে আসে। তার আগে আমরা গাছের ডালপালাগুলো পরিষ্কার করে থাকি। ৩-৪ বার মধু সংগ্রহ করার পর মৌচাকগুলো আরও তিন-চার মাস থাকে। যখন আম গাছে মুকুল আসার সময় হয় তখন মৌমাছিরা চলে যায়।
স্থানীয় কৃষক শামসুল হক প্রতিবেদককে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই গাছটিতে মৌচাক বসতে দেখি। গাছের প্রায় সব বড় ডালেই চাক বাঁধে মৌমাছিরা। একটি গাছে এতগুলো মৌচাক সাধারণত দেখা যায় না। অনেকেই এই গাছে অপরিপক্ক থাকা অবস্থায় মধু সংগ্রহ করতে আসলেও, ভাটা মালিকদের তদারকির কারণে তা পারে না।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিবেশবাদী সংগঠন সেভ দ্য নেচারের প্রধান সমন্বয়ক রবিউল হাসান ডলার বলেন, এক গাছে এত মৌচাক সাধারণত খুব কমই দেখা যায়। পরিবেশের ভারসম্য রক্ষায় মৌমাছিদের ভূমিকা অপরিসীম। তাই মৌমাছিরা যাতে র্নিভিঘ্নে মৌচাক তৈরি ও মধু সংগ্রহ করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
ভোলাহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আলী জানান, রাস্তার পাশে পাইকোড়ের গাছটিতে ৫০-৬০টি মৌচাক রয়েছে। যতটুক জেনেছি ১০-১৫ বছর ধরে এই গাছে মৌমাছিরা বাসা বাঁধে। এই দৃশ্য দেখতে খুবই ভালো লাগে। নিজ চোখে না দেখলে বলে বোঝাতে পারবো না দৃশ্যটি দেখতে কতো সুন্দর। কৃষকের উৎপাদিত বিভিন্ন ধরনের ফসল থেকে মধু সংগ্রহের জন্য মৌমাছিরা এখানে আসে। এতে ফসলের পরাগায়নে মৌমাছির ভূমিকা রয়েছে। এদিকে চলতি শীত মৌসুমে উপজেলায় মাঠে মাঠে ৯০০ মৌ বক্স বসিয়েছে মৌয়ালরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।