লাইফস্টাইল ডেস্ক : দেহের বাড়তি ওজন কমাতে প্রয়োজন সঠিক ডায়েট প্ল্যান, চেষ্টা আর ধৈর্য। অনেকেই ওজন কমানোর মিশনে নামেন ঠিকই কিন্তু কিছু দিন পর আর ধৈর্য ধরে রাখতে পারেন না, ফলে ওজনও কমে না। কেউ আবার মনে করেন ৩০ বছর বয়স পার করার পর ওজন কমানো অসম্ভব।
তবে এ সব ধারণাকে মিথ্যা প্রমাণ করেছেন শাম্ভবী ভাল্লা নামের ৪০ বছর বয়সী একজন ভারতীয় নারী। দুই বছরের চেষ্টায় নিজের দেহের ২৮ কেজি বাড়তি ওজন কমিয়েছেন তিনি। ৮৬ কেজি ওজন থেকে এখন তার ওজন ৫৮ কেজি। কীভাবে এত ওজন কমালেন শাম্ভবী?
৫ ফিট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার শাম্ভবীর ওজন ছিল ৮৬ কেজি। পেশায় দন্ত চিকিৎসক এই নারী নিজের বাড়তি ওজন নিয়ে অস্বস্তিতে ভুগতেন। একসময় স্বাস্থ্যের সুস্থতার কথা ভেবে ওজন কমানোর যাত্রা শুরু করেন। টানা দুই বছর স্বাস্থ্যকর খাদ্যগ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে তিনি ২৮ কেজি ওজন কমাতে সক্ষম হন।
শুরুটা যেভাবে
শরীরের বাড়তি ওজন নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগতেন শাম্ভবী। নিজের পরিস্থিতির কথা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রোজকার কাজ করতে গেলে কোনো শক্তিই পেতাম না। সেসঙ্গে স্বাস্থ্য নষ্ট হয়ে যাওয়ার একটা ভয় কাবু করে রাখতো। আয়নায় নিজেকে দেখে ভীষণ অসুখী মনে হতো। কিন্তু যখন আমি তা উপলব্ধি করে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনি তখন ধীরে ধীরে শরীরের বাড়তি মেদ কমতে শুরু করে।’
প্রথমদিকে ওজন কমলেও আবার তা বেড়ে যেত। কারণ, কোন খাবারে কত ক্যালরি, কী খাওয়া উচিত, কী বাদ দেওয়া উচিত শাম্ভবী জানতেন না। এরপর তিনি একজন প্রশিক্ষকের শরণাপন্ন হন। তার পরামর্শ অনুযায়ী ডায়েট ও ব্যায়ামে পরিকল্পনা সাজান।
কী কী খেতেন?
শাম্ভবী মূলত প্রশিক্ষকের নির্দেশনা অনুযায়ী খাবার খেতেন। তার এই ডায়েট চার্ট বিশেষজ্ঞ প্রশিক্ষকের নির্দেশনা ব্যতীত কারো অনুসরণ করা উচিত নয়। কারণ, দেহের উচ্চতা, ওজন, ব্যায়ামের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে একেক জনের ডায়েট চার্ট একেকরকম হয়ে থাকে। তবুও আপনি চাইলে কিছু অনুসরণ করে দেখতে পারেন।
সকালে- পাউরুটি (বাদামী পাউরুটি) ও ডিম অমলেট, ব্ল্যাক কফি।
দুপুরে- পনির ভাজি দিয়ে দুটি রুটি, টক দই, সালাদ।
রাতে- ভাত/রুটির সঙ্গে সবজি, টক দই।
এছাড়াও হালকা খাবার হিসেবে তিনি আপেল বা খেজুর খেতেন। ব্যায়ামের আগের খাবার হিসেবে খেতেন মিল্ক কফি আর ব্যায়ামের পর খেতেন হোয়ে প্রোটিন।
রুটিমাফিক ব্যায়াম
শরীরচর্চা বা ব্যায়ামকে এই নারী দৈনন্দিন জীবনের অংশ করে নিয়েছেন। সপ্তাহে ৬ দিন ব্যায়ামের ট্রেনিং করে থাকেন তিনি। দেহের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর এসব ব্যায়াম বেশ উপভোগও করেন শাম্ভবী। তিনি বলেন, ‘ব্যায়াম আমার শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে যা একপ্রকার পরম সুখ’।
কীভাবে নিজেকে অনুপ্রাণিত করতেন? এমন প্রশ্নের জবাবে শাম্ভবী বলেন, আমার অনুপ্রেরণা হলো আমার সন্তানরা। এর পাশাপাশি আমি ভাবতাম, আমি যদি ফিট হতে পারি তাহলে অন্তত একজন হলেও মানুষের উৎসাহ হতে পারব। এই ভাবনা নিয়েই আমার এগিয়ে চলা।
ব্যায়ামের ক্ষেত্রে যেন মনোযোগ না হারিয়ে যায় তাই এই বিষয়টিকে অবশ্যই করণীয় হিসেবে মস্তিষ্কে গেঁথে নেন শাম্ভবী। তার কাছে রোজ নিয়ম করে দাঁত ব্রাশ করা আর ব্যায়াম করা দুটোই সমান গুরুত্বপূর্ণ।
অনেকেই কম সময়ে কী করে দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন সে উপায় খোঁজেন। এতে শরীরের ক্ষতি তো হয়, কমে যাওয়া ওজনও আবার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এর চেয়ে ধৈর্য ধরে সময় নিয়ে, বিশেষজ্ঞ পুষ্টিবিদের সাহায্যে, ডায়েট আর ব্যায়ামের প্ল্যান সাজান। এতে ওজন কমার পাশাপাশি সুস্বাস্থ্যের অধিকারি হতে পারবেন আপনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।