আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানের মুদ্রা চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বিশ্বের অন্যতম সেরা মুদ্রা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আফগান মুদ্রার দাম ৯ শতাংশ বেড়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। দারিদ্রপীড়িত একটি দেশের জন্য এটা অনেক বড় অর্জন বলেই মনে করা হচ্ছে।
২০২১ সালের আগস্টে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। যার মধ্যদিয়ে প্রায় দুই দশকের যুদ্ধ ও সংঘাতের অবসান ঘটে। তবে সাবেক বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই আফগানিস্তানে নিজেদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো।
নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভে থাকা আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থও আটকে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এসব ঘটনায় ব্যাপক অর্থনৈতিক চাপের মুখে পড়ে তালেবান।
২০২১ সালের মার্চ মাসে এক মার্কিন ডলারের বিনিময়ে পাওয়া যেত ৭৭ দশমিক ৩০ আফগানি (আফগান মুদ্রা)। তালেবানের ক্ষমতা দখলের একদিন আগে এক ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৮ আফগানি।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পরিস্থিতি এতোটাই খারাপ হয় যে, ২০২১ সালের নভেম্বরে এক মার্কিন ডলারের মূল্য ১৩০ আফগানিতে পৌঁছায়। তবে এরপরই ফের ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে আফগানি। এবার প্রথমবারের মতো আফগান মুদ্রার মান সেরার তালিকায় উঠে এল।
ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, বৈদেশিক সহায়তা ও প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রম বৃদ্ধির ফলে চলতি কোয়ার্টারে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে অন্যতম সেরা মুদ্রা হয়েছে আফগানি।
মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ, সরাসরি লেনদেন ও রেমিট্যান্সের কারণে আফগানির মান ৯ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এটি কলম্বিয়ার মুদ্রা পেসো থেকে ৩ শতাংশ বেশি। সে হিসেবে এটি এ বছর বিশ্বের তৃতীয় সেরা মুদ্রা। এ তালিকায় প্রথম দিকে রয়েছে কলম্বিয়া ও শ্রীলঙ্কা।
আরও বলা হয়েছে, এ নিয়ে চলতি বছর আফগানির মান উন্নীত হলো ১৪ শতাংশে। মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বৈশ্বিক মুদ্রাবাজারের রেট অনুযায়ী, বাংলাদেশি টাকার চেয়েও শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তানের মুদ্রা। যেখানে ৭৭ আফগানিতে মিলছে ১ ডলার, সেখানে বাংলাদেশি মুদ্রায় গুনতে হচ্ছে ১১০ টাকা।
আফগানিস্তানে এখন বিদেশি মুদ্রার লেনদেন হয় মানি চেঞ্জারের মাধ্যমে। এদের বলা হয় সারাফ। বিদেশি নিষেধাজ্ঞার কারণে এখন সব ধরনের মুদ্রাই দেশটিতে প্রবেশ করে আফগানির মাধ্যমে। এমনকি দেশটির ভেতরে কোনো বিদেশি মুদ্রার কার্যক্রম চলে না।
দুই বছর আগে ক্ষমতায় আসা তালেবান আফগানিকে শক্তিশালী করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় লেনদেনে ডলার ও পাকিস্তানি রুপির ব্যবহার নিষিদ্ধ করা।
পাশাপাশি দেশের বাইরে থেকে মার্কিন ডলার আনার ওপরও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তালেবান অনলাইন বাণিজ্যও অবৈধ ঘোষণা করেছে। এসব আইন না মানলে কারাদণ্ডের ব্যবস্থাও রেখেছে তালেবান সরকার।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।