স্পোর্টস ডেস্ক : পাকিস্তানে এশিয়া কাপ না খেলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত, তা পরিবর্তন করার আহবান জানিয়েছেন শাহিদ আফ্রিদি। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নোয়নে পাকিস্তান সফর করে ভারতকে প্রথম পদক্ষেপটি নিতে বললেন তিনি। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের মতে, তার দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখন অনেক শক্তিশালী।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী, আগামী সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানে হওয়ার কথা এশিয়া কাপের ষোড়শ আসর। কিন্তু রাজনৈতিক শীতল সম্পর্কের কারণে প্রতিবেশী দেশে যেতে চায় না ভারত। তাই আসরটি নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজনের ইচ্ছার কথা গত অক্টোবরে জানান বিসিসিআই সচিব জয় শাহ, যিনি একই সঙ্গে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি।
কিন্তু এবারের এশিয়া কাপ নিজেদের মাটিতেই আয়োজন করতে অনড় পাকিস্তান। ভারত দল না এলে তাদের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ২০২৩ বিশ্বকাপ বয়কটের হুমকিও দিয়ে রেখেছে পিসিবি।
দোহায় সোমবার শেষ হয়েছে সাবেক ক্রিকেটারদের টুর্নামেন্ট লেজেন্ডস লিগ ক্রিকেট। ফাইনালে ওয়ার্ল্ড জায়ান্টসকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে আফ্রিদির নেতৃত্বাধীন এশিয়ান লায়ন্স। সেখানেই ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেন আফ্রিদি।
“ভারত এলে সত্যিই দারুণ হবে। ক্রিকেট ও পাকিস্তানের সঙ্গে (সম্পর্কের উন্নতিতে) ভারতের ভালো একটি পদক্ষেপ হতো। এটা যুদ্ধ ও লড়াইয়ের প্রজন্ম নয়। আমাদের চাওয়া, সম্পর্ক ভালো হোক।”
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে না ভারত-পাকিস্তান। দুই দলের দেখা হয় কেবল এশিয়া কাপ কিংবা আইসিসির টুর্নামেন্টে। এবার সেই সম্ভাবনাও ঝুলছে অনিশ্চয়তার সুতোয়।
ভারত সবশেষ পাকিস্তান সফর করে ২০০৮ সালে, এশিয়া কাপ খেলতে। এর দুই বছর আগে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে পাকিস্তানে যায় তারা। আর দুই দলের সবশেষ দ্বিপাক্ষিক সিরিজ হয়েছে ২০১২-১৩ মৌসুমে, ভারতের মাটিতে। পাকিস্তান সবশেষ ভারত সফর করে ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে।
দুই দেশের মধ্যে চলমান এই শীতল সম্পর্কের অবসান ঘটাতে পারে ক্রিকেট, বিশ্বাস করেন আফ্রিদি। ভারতীয় ক্রিকেটারদের সঙ্গে তার ও পাকিস্তানের অন্য ক্রিকেটারদের সুসম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন তিনি। তার মতে, শত্রু না বাড়িয়ে ভারতের উচিত বন্ধু তৈরি করা।
“আমরা যদি কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই এবং সে আমাদের সঙ্গে কথা না বলে, তাহলে কী আর করতে পারি? বিসিসিআই খুব শক্তিশালী বোর্ড, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু যখন কেউ শক্তিশালী হয়, তার দায়িত্বও বেশি থাকে।”
“শত্রু বাড়ানোর চেষ্টা না করে বন্ধু বানাতে হবে। আর যখন বন্ধু বাড়বে, শক্তি আরও বাড়বে। ভারতীয় দলে আমার এখনও বন্ধু আছে। যখন আমাদের দেখা হয়, আলোচনা করি। ওইদিন আমার রায়নার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, আমি তার কাছে একটি ব্যাট চাইলাম, সে আমাকে একটি ব্যাট দিল।”
গত কয়েক বছরে পাকিস্তান সফর করেছে ভারত ছাড়া প্রায় সব দল। তাই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কিছু দেখেন না আফ্রিদি। পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে চলমান সমস্যার সমাধান করার পরামর্শ দিলেন সাবেক এই তারকা অলরাউন্ডার।
“পাকিস্তানে নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের বিষয়ে বলব, সম্প্রতি এখানে অনেক আন্তর্জাতিক দল সফর করেছে। ভারত থেকেও আমরা নিরাপত্তার হুমকি পেয়ে থাকি। কিন্তু দুই দেশের সরকার যদি অনুমতি দেয়, তাহলে সফর হবে। আর যদি সফর শেষ পর্যন্ত নাই হয়, তার মানে আমরা ওই মানুষদের সুযোগ দিচ্ছি, যারা শুধু চায় তাদের মধ্যে যেন কোনো ক্রিকেট না থাকে।”
“আসল কথা হলো, আমরা কখনই পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করি না। যোগাযোগ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতিবিদরাও তাই করেন, আলোচনা করেন। নিজেদের মধ্যে না বসা পর্যন্ত কোনো কিছুরই সমাধান হবে না। ভারত দল পাকিস্তানে আসলে ভালো হতো। আমরা এবং আমাদের সরকার পরস্পরের সঙ্গে আরও ভালো সম্পর্ক চাই।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।