চাঁপাইনবাবগঞ্জে আগাম আমের বাগান বিক্রিতে হিমশিম

mango bagan

জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে আগাম আমের বাগান বিক্রি করতে হিমশিম খাচ্ছেন মালিকরা। গাছে আম নাই এমন অজুহাতে বাগান কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে বাগান মালিকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। তাদের দাবি এবার মৌসুমে বাগান মালিকদেরই গাছ থেকে আম নামিয়ে বাজারে বিক্রি করতে হবে।

mango bagan

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, গত বারের তুলনায় মাত্র ১৬ হেক্টর বেড়ে ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষাবাদ হচ্ছে গোটা জেলাজুড়ে। এবার আমের মুকুল এসেছে ৭৩ শতাংশ গাছে, যা গতবছরের তুলনায় ২৪ শতাংশ কম। চলতি বছর আমের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মেট্রিকটন। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিকটন বেশি।

তারা জানান, এবারের মৌসুম আমের ফলনের জন্য অফ ইয়ার বা কম ফলনের বছর। অফ ইয়ার হওয়ার পরেও জেলার বড় বড় আমের বাগানগুলোর গাছে খাদ্যের অভাব থাকায় আশারনুরুপ ভাবে আমের ফলন হয়নি।

বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত বছরের শেষ দিকে আমের গাছে মুকুল আসে। তারপর থেকে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। মুকুল ফেটে গুটি বের হলেই শুরু হয় আগাম আমের বাগান বেচাকেনার কার্যক্রম। কিন্তু এবার প্রলম্বিত শীত আর বৈচিত্র্যময় আবহাওয়ার কারণে মুকুল এসেছে বাগানের মাত্র ৭০ শতাংশ আম গাছে। তবে ফাগুনের বৃষ্টিতে আমের মুকুল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রথম দফায় হোঁচট খাওয়ার পরেও বাগান মালিকরা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে। সব মিলিয়ে জেলার বাগানগুলোয় এবার আমের ফলন খুবই কম। যা তাদের কাপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমের বাগান আছে শিবগঞ্জে। সাধারণত ব্যবসায়ীদের আগ্রহ এই উপজেলাকে ঘিরেই। এখানকার আমবাগানি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আমের ফলন খুবই কম, যা আমাদের খুব ভাবাচ্ছে। আগাম আমের বাগান বিক্রি করতে গেলেও খুব বেগ পেতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা বাগান দেখতে আসছে, কিন্তু গাছে আম না থাকার ফলে তারা কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তা যদিওবা বাগানের দাম বলছে কিন্তু সেটাও অপ্রত্যাশিত দাম।

কানসাটের আম বাগানি মোহাম্মদ বাবু বলেন, আমার ৪টা জায়গায় বাগান আছে। সেসব বাগানগুলোয় এবার আমের ফলন খুবই কম। তাও বাড়তি দামে কীটনাশক-রাসায়নিক ব্যবহার করে গাছের পরিচর্যা করেছি। আগাম আমের বাগান বিক্রি করতে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা বাগান দেখে বলছে আম নাই। যার জন্য তারা নায্য দাম বলছে না। কম দামে বাগান বিক্রি করতে গেলে আমার সব পুুঁজি হারিয়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, সাধারণত জেলার বাগান মালিকরা অন্যের কাছে আম হিসেবে বাগান বিক্রি করে। এবার অনেকেই বাগান বিক্রি করতে পারছেন না। এমন অবস্থায় আমাদেরই গাছ থেকে আম নামিয়ে বিক্রি করতে হবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমগাছগুলোয় মুুকুল কম এসেছিল। তবুও কম মুকুল নিয়ে কিছুটা আশার আলো দেখেছিলেন এখানকার চাষিরা। কিন্তু ফাগুনের বৃষ্টিতে আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এতে আমের কাঙ্ক্ষিত গুটি আসেনি। যার কারণে এবার আমের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্যই বাগানগুলোর অগ্রিম ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

গত কয়েকধরে এখানকার আম চাষিরা ব্যপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবারও যদি এমন হাল হয় চাষিদের তাহলে জেলার অর্থনীতিতে পড়বে বিরুপ প্রভাব। এ সঙ্কট নিরসনে চাষিদের প্রণোদনার দরকার বলে মনে করেন ইসমাইল খান শামীম।

১ কেজির দামে কেনা যাবে ২ ভরি সোনা, বিশ্বের সবচেয়ে সবজি এটি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মনোয়ার হোসেন বলেন, আগাম আমের বাগান বিক্রি করতে যদি কোনো বাগানি পরামর্শ চায় তাহলে তাদের পরামর্শ দেওয়া হবে। এছাড়া আমাদের কিছুই করার নাই।