জুমবাংলা ডেস্ক : দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনামকে নিয়ে মুখ খুললেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) আসিফ নজরুল তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সুমন রহমান নামে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকের একটি লেখা কপি করে শেয়ার করেছেন।
ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসটি পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- মাহফুজ আনাম লিখেছেন, হাসিনার অপশাসনের কারণে যেন আমাদের বঙ্গবন্ধু-বিচার প্রভাবিত না হয়।
বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা, এবং একই সঙ্গে বিগত ১৫ বছরের হাসিনা-দুঃশাসনকে শক্তি জোগাতে থাকা সবচেয়ে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক আইকন।
এখন সমস্যা হইতেছে, একাত্তরের মহান বঙ্গবন্ধুকে যখনই শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করতে যাই, সেই ফুল গিয়া পড়ে এক পলাতক হাসিন দিলরুবার পায়ে। তিনি তরতাজা হৈয়া যান, চট করে ঢুকে পড়বার জন্য রেডি হৈয়া পড়েন।
দিলরুবার মনোরঞ্জন হবে না, অথচ ফুল পড়বে পিতার পায়ে- এমন রাস্তা ঐ হাসিন বিগত ১৫ বছরে একদম সিলগালা করে দিয়েছেন। ১৫ বছরের আওয়ামী শাসনামল ছিল রোম শহরের মত, অল রোডস লিড টু রোম! আপনি বায়ান্নকে ভালবাসেন- ফলে টাকা পাচার করবে এস আলম, একাত্তরকে আপহোল্ড করেন- মজা মারে মোজা বাবু, শেখ মুজিবকে শ্রদ্ধা করেন- জেল হেফাজতে মারা যাবে লেখক মুশতাক, রাজাকারকে ঘৃণা করেন, পচাত্তরে শোক প্রকাশ করেন- ফুলে ফেঁপে উঠে সালমান এফ রহমান। বাংলাদেশের ঐতিহাসিক অর্জনগুলোকে এবং আনন্দ এবং শোকের মুহূর্তগুলোকে এভাবে আওয়ামীকরন করা হয়েছে, মনেটাইজ করা হয়েছে এবং এর পেছনে শেখ মুজিবকে একটা ধর্মতাত্ত্বিক প্রকল্প আকারে হাজির করা হয়েছে।
মাহফুজ আনাম কোন তরিকায় এই ধর্মতত্ত্ব, দুঃশাসন আর হত্যাযজ্ঞের স্মৃতিকে পাশ কাটায়া বঙ্গবন্ধুকে তার প্রাপ্য মর্যাদাটুকু দিতে পারতেছেন, সেইটা তিনি লেখেন নাই। নির্মোহ ইতিহাসবেত্তার জন্য রাইখা দিছেন। ঐতিহাসিকের বঙ্গবন্ধু আর কালচারাল আইকন শেখ মুজিবের মধ্যে কিভাবে ফারাক করতে পারতেছেন তাও জানান নাই। তার লেখায় হাসিনার অপশাসনের বিবরণ আছে, শেখ মুজিবুর রহমানের বীরত্বগাঁথার বিবরণ আছে — কিন্তু যেটা আশংকাজনকভাবে অল্প আছে সেটা হল বাহাত্তর থেকে পচাত্তর। বিগত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট শাসনব্যবস্থার গোড়াপত্তন হয়েছিল যেখানে। মাহফুজ আনাম এই ধারাবাহিকতাটুকু একেবারেই মিস করে গেছেন।
আর হ্যাঁ, মাহফুজ আনাম অবশ্য “হাসিনার অপশাসন” বলছেন, “ফ্যাসিস্টিক” বলছেন, কিন্তু “ফ্যাসিস্ট” বলছেন না। ফলে, ইতিহাসের মেলবন্ধন আর ফ্যাসিবাদের সাংস্কৃতিক আইকনগুলোকে তার না চিনবারই কথা।
উল্লেখ্য, সাধারণ শিক্ষার্থী ও মানুষের তোপের মুখে পড়ে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরপর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। এ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে।
এ অধ্যাপক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেছেন। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা মাধ্যমে কথা বলেছেন। যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় ছিলেন ড. আসিফ নজরুল।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়া এ অধ্যাপক আগে থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব সক্রিয়। বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রের অনিয়ম ও সাংবিধানিক ইস্যুতে মতামত জানাতে দেখা গেছে তাকে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।