জুমবাংলা ডেস্ক : পদ্মফুলের কথা ভাবলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে খাল, বিল বা উন্মুক্ত জলাশয়ের দৃশ্য। সময়ের বিবর্তনে সেই পদ্মফুল এখন বিলীন হওয়ার পথে। সংরক্ষণের অভাবে বেশিরভাগ উন্মুক্ত জলাশয়ে আর তার দেখা মেলে না। সেই বিলুপ্তপ্রায় পদ্মফুলে নতুনভাবে সেজেছে যশোর কালেক্টরেট পুকুর।
বর্তমান জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে এখন সরোজিনী (গোলাপি রঙের পদ্মফুল) আর রঙিন মাছের লুটোপুটির দৃশ্য দেখা যাচ্ছে পুকুরজুড়ে। পদ্মফুলের সবুজ পাতার মধ্যে চোখে পড়ে বক আর সাপের আনাগোনা। এমন নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। নাগরিক জীবনে কোলাহল পেরিয়ে এক বিন্দু স্বস্তি পেতে সকাল-বিকাল তারা ভিড় করছেন পুকুর পাড়ে। কলেক্টরেট পুকুরটি এখন যেন শহরের পর্যটনের কেন্দ্রবিন্দু। বর্তমান জেলা প্রশাসকের অনেকগুলো নন্দিত উদ্যোগের একটি হচ্ছে এটি।
জানা যায়, ১৭৮৬ সালে যশোর কালেক্টরেটের যাত্রা শুরু। ২০০ বছরের পথচলায় প্রশাসনিক ও ভৌগলিকভাবে বারবার রূপ বদল হয়েছে যশোর জেলার। বর্তমান জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বা কালেক্টর ভবন ঘিরেই জেলার প্রধান প্রশাসনিক দপ্তর। বর্তমান জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান দায়িত্ব গ্রহণের পর অনেকগুলো নন্দিত উদ্যোগ নিয়েছেন। তার নন্দিত উদ্যোগগুলোর একটি হলো-কালেক্টরেট পুকুর খনন ও সংস্কার করে পর্যটন কেন্দ্রে রূপান্তর। নতুনরূপে এ পুকুর এখন যশোরবাসীর অন্যতম দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।
পুকুরে চার পাশের পাড় কংক্রিটে বাঁধাই করা হয়েছে। রয়েছে শানবাঁধানো দুটি সিঁড়ি। পুকুরে ৮ হাজারের বেশি রঙিন মাছ অবমুক্ত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুই শতাধিক পদ্মফুলের কন্দ রোপণ করা হয়েছে। গোলাপি রঙের পদ্মফুলের মাঝে রঙিন মাছের লুটোপুটি, সাপ ও বকের আনাগোনায় একেবারেই বদলে গেছে পুকুরের চিত্র। এর নয়নাভিরাম দৃশ্যে বিমোহিত দর্শনার্থীরা।
প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে পুকুর পাড়ে গাছতলায় বসেছিলেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আদালতে কাজে এসেছিলাম। সেই কাজ শেষ হতে আরও কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। তাই বিশ্রাম নেওয়ার জন্য এখানে বসেছি। ভালো লাগছে এখানে এসে। পুকুরটা বদলে গেছে। বিশেষ করে পদ্মফুল আর রঙিন মাছ দেখে খুব ভালো লাগছে। সুমন কবীর নামে এক শিক্ষার্থী জানান, আগে পুকুরটা মজা ছিল। সংস্কার করায় এর চেহারা বদলে গেছে। রঙিন মাছ ও পদ্মফুলের কারণে আরও আকর্ষণীয় হয়েছে।
সাবরিনা খাতুন নামে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। পুকুরের চার পাশে বসার সুব্যবস্থা রয়েছে। ইচ্ছা করলে হাঁটাও যায়। পুকুর পাড়ে বসে বা হাঁটতে হাঁটতে পদ্মফুল আর রঙিন মাছের খেলা দেখে শিশুরা বেশি খুশি হয়। আমি বাচ্চাদের নিয়ে মাঝে মাঝে এখানে ঘুরতে আসি। জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান বলেন, আগে কালেক্টরেট পুকুরটি মজা পুকুরের মতো ছিল। জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ টুরিজম বোর্ডের আর্থিক সহযোগিতায় এটি সংস্কার করেছি। এতে পদ্মফুল রোপণ করেছি। একই সঙ্গে রঙিন মাছ ছেড়েছি। পুকুরটি দৃষ্টিনন্দন হওয়ায় প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী আসছেন। তারা পদ্মফুলের সমাহার ও রঙিন মাছের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।