জুমবাংলা ডেস্ক : রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের অপসারণ ইস্যুতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দেখা গেছে। কেউ বলছে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগ করতে হবে আবার কেউ বলছেন , এখনই না। এমন পরিস্থিতিতে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্র সমন্বয়কদের সঙ্গে বিএনপির মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে।
বিএনপির দাবি, সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে, বিধায় এখনই রাষ্ট্রপতির অপসারণ নয়। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা রাষ্ট্রপতির অপসারণের বিষয়ে অনড়। তারা এ-ও বলেছেন, রাষ্ট্রপতির অপসারণে রাজনৈতিক দলের মধ্যে কেউ বিরোধিতা করলে তাকে বাদ দিয়ে ঐকমত্য তৈরি করা হবে। তবে ছাত্র সমন্বয়কদের সঙ্গে বিবাদে জড়াতে চায় না বিএনপি। তারা বিষয়টি নিয়ে কৌশলী অবস্থানে থাকতে চায়।
বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা বলছেন, তাদের দলীয় অবস্থান স্পষ্ট, রাষ্ট্রপতির অপসারণ বা পদত্যাগ নিয়ে নতুন করে কোনো জটিলতা তৈরি হোক, তারা তা চান না। রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা রাষ্ট্রের অংশীজন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতির ইস্যুটির যৌক্তিক সমাধান করতে হবে। এখানে হুট করে রাজপথের বিক্ষোভ দেখে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। এতে হিতে বিপরীত হবে।
তারা আরও জানান, ছাত্রদের মতামতের বিপরীতে বিএনপি কোনো অবস্থান নেবে না। ছাত্রদের বিপক্ষে গিয়ে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দিলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হতে পারে বলে মনে করছেন তারা। বিএনপি রাষ্ট্রপতির ইস্যুতে সাংবিধানিক অবস্থানে জোর দেবে। ছাত্রদের বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষণে রাখবে। তবে মুখোমুখি অবস্থানে যাবে না দলটি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাষ্ট্রপতির বিষয়টি অত্যন্ত সংবেদনশীল। আমরা প্রথমে এটির সাংবিধানিক ব্যাখ্যা দিয়েছি। ছাত্ররা কে কী বলল সেটা তারা ভালো জানে। বিএনপি এটি নিয়ে আগের অবস্থানেই আছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ছাত্ররা তাদের মতামত ব্যক্ত করেছে। কিন্তু তাদের এটাও বুঝতে হবে এখন সময়টা খুবই স্পর্শকাতর। রাষ্ট্রপতির বিদায়ের পর সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হলে বিদেশি ষড়যন্ত্র চেপে বসতে পারে। আমাদের মূল লক্ষ্য বাধাগ্রস্ত হবে এমন কিছুই করা উচিত হবে না।
তিনি বলেন, বিএনপি কী কারণে এ সময়ে রাষ্ট্রপতির অপসারণ চায় না, তার ব্যাখ্যা দিয়েছে। এ সময়ে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হতে পারে। নতুন বিতর্ক তৈরি করবে। এর সুবিধা নিতে পারে পতিত ফ্যাসিস্টরা। ফ্যাসিবাদী উত্থানের কোনো সুযোগ দেওয়া হবে না।
তার মতে, এখন অগ্রাধিকার থাকা উচিত নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো, রোডম্যাপের মাধ্যম্যে নির্বাচনি সড়কে ওঠা।
এদিকে, বুধবার সকালে যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, দেশে নতুন কোনো সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক সংকট যেন সৃষ্টি না হয় সেদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে। যদি কেউ সেটা করতে চায় সেটাকে আমরা সবাই মিলে মোকাবিলা করব।
বৈঠকে অংশ নেওয়া স্থায়ী কমিটির আরেক নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদ পরে গুলশানে সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতির পদটা একটা সাংবিধানিক পদ বা একটা প্রতিষ্ঠান, সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। এ পদে হঠাৎ পদত্যাগের মাধ্যমে শূন্যতা সৃষ্টি হলে সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টি হবে, রাষ্ট্রীয় সংকটের সৃষ্টি হবে।
বিএনপির এমন অবস্থানের প্রসঙ্গ টেনে বুধবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সংবিধানের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে টিকিয়ে রাখতে চায়। দেশবাসীর কাছে আমাদের আহ্বান, কোনো রাজনৈতিক দল যদি ফ্যাসিস্ট রেজিমের অংশ চুপ্পুকে অপসারণের আন্দোলনে না আসে, তা হলে তাদের ত্যাগ করে একসঙ্গে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।