জুমবাংলা ডেস্ক : পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজ মুসুল্লীর দুই ছেলে ১০টি দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জমির মালিকানা দাবি করে গতকাল বৃহস্পতিবার সৈকতসংলগ্ন শুঁটকি মার্কেটে এ তালা দেওয়া হয়।
দোকানিদের সূত্রে জানা গেছে, তাঁরা প্রায় ৬ বছর আগে বেল্লাল মোল্লা নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে দোকানগুলো ভাড়া নেন। এ সময় বেল্লালকে প্রত্যেক দোকানি ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা অগ্রিম দেন। ৫ আগস্টের পর ওই দোকানগুলোর জমির মালিকানা নিয়ে বেল্লালের সঙ্গে আজিজ এবং রাসেদুল ও আফতাবের বিরোধ দেখা দেয়। দোকানিরা তিন পক্ষকে বসে বিষয়টি সমাধানের অনুরোধ করলেও কাজ হয়নি।
এদিকে বিএনপি নেতা আজিজের ছেলে লতাচাপলী ইউনিয়ন যুবদলের সহসাধারণ সম্পাদক রিয়াজ মুসুল্লী তাঁদের সঙ্গে দোকানিদের নতুন করে ভাড়ার চুক্তিপত্র বা ডিড করার চাপ দেন। এতে দোকানিরা রাজি না হলে রিয়াজ, তাঁর ভাই মহিপুর থানা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালাউদ্দিন মুসুল্লীসহ তাঁদের অনুসারীরা বৃহস্পতিবার সকালে দোকানগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেন।
নাম প্রকাশ না করে এক দোকানি বলেন, ‘আমরা রাজনীতি বুঝি না। আমাদের সামান্য শুঁটকি বিক্রি করে পেট চলে। কিন্তু গতকাল রিয়াজ মুসুল্লী, তাঁর ভাইসহ ৮-১০ জন আমাদের দোকানে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। বর্তমানে সে আমাদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তার সঙ্গে আমাদের ডিড করতে বলেছে। দুই দিন পর ঈদ। রোজার এক মাস কোনো বিক্রি ছিল না, লোকসানে দিন কেটেছে। এখন ঈদে দোকান খুলতে না পারলে আমাদের ব্যবসা লাটে উঠবে।’
এ নিয়ে কথা হলে বেল্লাল বলেন, ‘১৯৯৬ সালে পটুয়াখালী পৌরসভার কমিশনার মিলন মিয়ার স্ত্রী উম্মে সালমার কাছ থেকে আমি এই জমি ক্রয় করেছি। সে আমাকে সাড়ে ১৬ শতাংশ জমির দলিল দিয়েছে। পরে সেখানে দোকান তুলে ভাড়া দিয়েছি। দোকান তোলার বা পরে ভাড়া দেওয়ার সময় অন্য কেউ এ জমির মালিকানা দাবি করেনি। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার হঠাৎ ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা দোকানগুলো দখলে নিয়েছে। এর আগে মুসুল্লী বাড়ির ছেলেরা আমাকে মারধর করেছে। আমি দীর্ঘদিন হাসপাতালে ভর্তি ছিলাম।’
জমির মালিকানা দাবি করা আরেক পক্ষের রাসেদুল ও আফতাব জানান, তাঁরা সাত মাস আগে ওই জমির বিষয়ে মালিক লাল মিয়ার ওয়ারিশদের কাছ থেকে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি বা আমমোক্তারনামা পেয়েছেন। এখন জমি বুঝে পাওয়ার জন্য অনেকের কাছে ঘুরছেন। এ বিষয়ে দেওয়ানি মামলা চলমান রয়েছে।
অন্যদিকে দোকানে তালা দেওয়া রিয়াজ বলেন, ‘এ জায়গা আমার বাবার। আমরা বিষয়টি সমাধানের জন্য প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। পরে দোকানিদের আমাদের কাছ থেকে ডিড নিতে বলেছি। কিন্তু কোনো সমাধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার দোকানগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি।’
রিয়াজের বাবা আজিজ বলেন, ‘আমার ওই জমির বৈধ মালিকানার কাগজপত্র রয়েছে। যারা আমার সঙ্গে ডিড করেছে, তাদের দোকান খুলে দেওয়া হয়েছে। বেল্লাল মোল্লা আওয়ামী লীগের ক্ষমতার জোরে ওই জমি দখল করে মার্কেট নির্মাণ করে ভাড়া দিয়েছিল। রাসেদুল-আফতাব ওই জমি দাবি করলেও তাদের দাগ অন্য জায়গায়। আমার দাগের মধ্যে তাদের জমি নেই।’
যোগাযোগ করা হলে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।