সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে হামলার অভিযোগে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খানসহ ২১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) দুপুরে মানিকগঞ্জের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ছাত্র প্রতিনিধি মেহেরাব হোসাইন বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৮ জুলাই সকাল ১০টায় ছাত্র জনতা জেলার আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে থেকে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে। মিছিলটি খালপাড় ব্রীজের দিকে গেলে, পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওঁৎ পেতে থাকা আসামিরা দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা হাতবোমা ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে অতর্কিতে হামলা চালায়।
হামলায় মো. আরমান হোসাইন, হাসনা হেনা, মাহফুজ হোসাইন, তন্ময়সহ অনেকে গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে আরমান ও হাসনাকে ব্রীজের উপর ফেলে ধারালো রামদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করা হয়।
প্রথম দফার হামলার পর দুপুর ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মানরা এলাকায় শিক্ষার্থীরা আবারও জমায়েত হয়। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ মালেক ও সাবেক পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খানের নেতৃত্বে ও হুমকিতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামীপন্থী বাহিনী আবারও দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
হামলায় আহত শিক্ষার্থীরা মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক ও কর্মীরা তাদের ফিরিয়ে দেন। এরপর কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে সেখানেও একই চিত্র।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, হাসপাতালের উপপরিচালক ও মামলার ৩২ নম্বর আসামি ডা. জহিরুল করিম ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের সঙ্গে মিলে আহতদের জোরপূর্বক বের করে দেন। পরে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
মামলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে রয়েছেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এস এম জাহিদ, সাবেক সাংসদ নাঈমুর রহমান দুর্জয়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, পৌরসভার সাবেক মেয়র রমজান আলী, যুবলীগ, কৃষক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং সাবেক জনপ্রতিনিধি, আইনজীবী, চিকিৎসক ও পুলিশের সাবেক কর্মকর্তারা।
এ মামলায় এত বড় সংখ্যক রাজনীতিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের আসামি করায় জেলার রাজনীতি ও প্রশাসনে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।