সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের শিবালয়ে গ্রামের উন্নয়ন মাল্টিপারপাস কো-অপারিটিভ সোসাইটি-নামক এনজিও কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের টাকা আত্মসাৎ করায় সংস্থার চেয়ারম্যান জগন্নাথ চন্দ্র দাশকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন ভুক্তভোগীরা।
সোমবার (৭ জুলাই) সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত উপজেলা হল রুমের সামনে এনজিও চেয়ারম্যানকে বেঁধে রাখা হয়। এ নিয়ে শতাধিক আমানতকারীরা টাকা ফেরত পেতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যলয়ের সামনে অবস্থান নেন। তাদের দাবি তিন শতাধিক লোকের কাছ থেকে বিভিন্ন মেয়াদে রাখা প্রায় তিন কোটি টাকা আমানত নিয়ে এনজিও মালিকরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এ বিষয়ে গ্রাহকরা মামলা করলেও এনজিও মালিকরা সম্প্রতি জামিনে এসে এলাকায় ঘুরতে থাকেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার টেপড়া এলাকায় এক যুগ আগে জগন্নাথ দাশ, আলম হোসেন, রজ্জব আলী, মোহাম্মদ মাষ্টারের যৌথ পরিচালনায় গ্রামের আলো ও গ্রামের উন্নয়ন মাল্টিপারপাস কো-অপারিটিভ সোসাইটি নামের দুইটি এনজিও খোলেন। ঋণদান, সঞ্চয়, জামানতসহ বিভিন্ন মেয়াদে গ্রাহকদের কাছ থেকে তারা আমানত সংগ্রহ করেন। নিদিষ্ট সময় পার হলে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করে তারা। পরবর্তীতে কয়েক বছর আগে ওই এনজিও’র কার্যকর্ম বন্ধ করে তারা গা ঢাকা দেন।
ভুক্তভোগী আমানতকারীরা জানান, আমানতের লভ্যাংশ দুরের কথা, আমাদের মুল টাকাও ফেরত দেয়নি। আমাদের কষ্টার্জিত টাকা হারিয়ে এখন সবাই সর্বশান্ত হয়ে গেছি। মামলা দিয়েও টাকা ফেরত পাইনি। এনজিও মালিকরা জামিনে এসে এলাকায় ঘুরছে। আজ এনজিও’র চেয়ারম্যান জগন্নাথ দাশকে আমরা বেঁধে রেখেছি। এ টাকা ফেরত না পেলে আমাদের সাবাইকে পথে বসতে হবে।
স্থানীয় উলাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আনিসুর রহমান আনিস বলেন, আমার এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা গ্রামের উন্নয়ন মাল্টিপারপাস কো-অপরেটিভ সোসাইটি ও গ্রামের আলো নামের দুইটি এনজিও আমানত সংগ্রহ করে। মেয়াদ শেষ হলেও টাকা ফেরত দিচ্ছে না। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা প্রতিদিন আমার কাছে কান্নাকাটি করে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য। স্থানীয় জগন্নাথ দাশ, আলম, রজ্জব ও মোহাম্মদ মাষ্টার এনজিও গুলো পরিচালনা করতো। গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। গ্রাহকদের আমানত যাতে ফেরত পায়, আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।
আজ সোমবার রাতে এ রির্পোট লেখা পর্য়ন্ত ভুক্তভোগী গ্রাহকরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কক্ষে এনজিও’র চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ আলোচনায় বসেন। সেখানে মানিকগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের দায়িত্বরত সদস্যেরাও উপস্থিত ছিলেন । দীর্ঘ আলোচনায় কোন সুরাহা না হওয়ায় এনজিও চেয়ারম্যানকে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।