সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ শহরে রাত হলেই শুরু হয় কুকুর ও বালি-মাটিবাহী অবৈধ ট্রাকের রাজত্ব। এতে রাতে আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হয় সাধারণ মানুষকে।
রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, সদর হাসপাতাল গেট, কাঁচাবাজার, টেকনিক্যাল স্কুল, ওয়্যারলেছ গেট, খালপাড়, গঙ্গাধরপট্টি, শহরের শহিদ রফিক সড়ক, কোর্ট চত্ত্বর, দুধবাজার, স্বর্ণকারপট্টি, লঞ্চঘাট, জরিনা কলেজ মোড়, বেউথা মোড়, এলজিইডি গেট, বয়েজ স্কুল মাঠ, নগর ভবন, স্টেডিয়াম গেট, ক্যাপ্টেন হালিম চত্বর, মডেল স্কুল, বান্দুটিয়া বাজার, ঘন্টিপাড়া মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ থেকে ১৫ টি করে কুকুর রাস্তাজুড়ে অবস্থান নিয়েছে। সব মিলিয়ে দুই শতাধিক কুকুর অরক্ষিত অবস্থায় ঘোরাফেরা করছে শহর ও আশপাশের এলাকায়।
অপরদিকে, রাত ১০টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত খোলা অবস্থায় মাটি ও বালিবাহী ট্রাক বেপরোয়া গতিতে বেউথা থেকে বাসস্ট্যান্ড হয়ে বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করে। এতে সড়কজুড়ে বালি ও মাটির স্তপ জমে গেছে। ফলে ধুলোবালিতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শহরবাসীকে।
রিকশা চালক লাভলু বলেন, দিনে গরু লালন পালন করি, আর রাতে রিকশা চালিয়ে রোজগার করি। কিন্ত রাস্তায় অতিরিক্ত মাটি-বালির ট্রাক চলাচল করায় সব সময় আতঙ্কে থাকি। তারা যে গতিতে গাড়ি চালায় এতে যেকোন সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আর তাদের কারণে রাস্তায় প্রচুর ধুলাবালি জমে।
হাসপাতাল গেইটে পান দোকানী সানোয়ার বলেন, ধুলোবালির কারণে আমাদের প্রচুর সমস্যা হয়। দোকানের অনেক মালপত্র নষ্ট হয়ে যায়।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক রোগীর স্বজন বলেন, বাসস্ট্যান্ড, হাসপাতাল গেইট ও আশপাশে যে পরিমাণ কুকুর থাকে সেটা দেখলেই ভয় লাগে। এসব কুকুর অনেক সময় মানুষজনের দিকে তেড়ে আসে।
রাতের বেলা খোলা অবস্থায় বালি ও মাটি বহনের বিষয়ে জানতে চাইলে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশের টহল দলের উপপরিদর্শক মীর শহিদুল বলেন, ট্রাক চালক ও মাটি-বালি ব্যবসায়ীদের বারবার সতর্ক করার পরও তারা সেটা গ্রাহ্য করছে না। মাঝে মাঝেই ট্রাক জব্দ করে জরিমানা করা হয়। এরপরও তাদের থামানো যাচ্ছেনা।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বিষয়টি নিয়ে জেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে উত্থাপন করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হলে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো।
এদিকে মানিকগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক সানজিদা জেসমিন বলেন, কুকুর ও বালিবাহী ট্রাকের বিষয়টি আমাদের এখতিয়ার বহির্ভূত।
এসব বিষয়ে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডাঃ মো. খুরশীদ আলম বলেন, কুকুরের ভ্যাক্সিনেশনের জন্য ইতোপূর্বে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি প্রকল্প ছিল। এখনও সেটি চালু আছে কি’না খোঁজ নিতে হবে। প্রকল্প চালু না থাকলেও পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, পৌর এলাকায় কুকুরের ভ্যাক্সিনেশন ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের। পৌরসভায় আছে কিনা আমার জানা নেই। আমি পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে বিষয়টি দেখবো। আর খোলা ভাবে মাটি-বালি বহনকারী ট্রাকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।