সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় মামাকে কুপিয়ে পালিয়েছে রবিউল (৩৫) নামের এক জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) সদস্য। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে চাচাতো মামাসহ কয়েকজনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে সে।
এ ঘটনায় পর আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য প্রথমে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক আহতের মধ্যে রেজাউল বেপারী (৩৯) ও মতিন (৪৩) দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
ঘটনার পর থেকেই ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এলাকাবাসীর। রবিউলসহ তার সহযোগীদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া এলাকায় মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসী।
মামলা প্রধান আসামি রবিউল জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এর ময়মনসিংহ কার্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যা সাত টার দিকে উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ভাড়ারিয়া গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটায় রবিউল, রাইসুল, মোস্তাফা, মজিবর বেপারী এবং সালাম বেপারীসহ কয়েকজন।
ঘটনার পর দিন হামলার শিকার ভুক্তভোগীর বোন শিল্পী আক্তার বাদি হয়ে এনএসআই সদস্য রবিউলসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর পুলিশ এজহারভুক্ত আসামি মজিবর বেপারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিক ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ভুক্তভোগী ও হামলাকারীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিরোধের জেরে গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সন্ধ্যা সাতটার দিকে হামলার শিকার আহত রেজাউল বেপারী, সাহেব আলী, মতিন বেপারী ও পিংকি আক্তারসহ পরিবারের অন্য সদস্য এবং অভিযুক্ত রবিউল, রাইসুল, মোস্তাফা, মজিবর বেপারী এবং সালাম বেপারীর সঙ্গে জমি নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভুক্তভোগীদের উপর হামলা করে। এ সময় ধারালো দেশী অস্ত্রের কোপে চার জন আহত হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়। আহতের মধ্যে রেজাউল বেপারী ও মতিন বেপারী ঢাকা পুঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং সাহেব আলী মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মামলার প্রধান আসাসি ও এনএসআই সদস্য রবিউল বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা নিজেদের মধ্যে। আহতরা আমার চাচাতো মামা হয়। তবে আত্মীয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ ছিল এটা সত্য। তবে যে ঘটনাটি ঘটেছে এর জন্য আমি খুবই লজ্জিত। এটি ঠিক হয়নি।
মানববন্ধনে ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা বলেন, জমি নিয়ে অনেক দিন ধরে বিরোধ চলছে, কিন্তু কখনও এমন হয়নি। ওরা দেশীয় অস্ত্র নিয়া আইসা এইভাবে মারবে। একটা মানুষ হইয়া আরেকজন মানুষকে কিভাবে কোপাইতে পারলো। আমরা এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ‘এই ঘটনার পরে ভুক্তভোগীর বোন বাদি হয়ে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রুজুর পরে অভিযান চালিয়ে এজহারভুক্ত একজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।