নিজস্ব প্রতিবেদক: সাভারের আশুলিয়ায় অটোরিকশা ছিনতাইসহ তিন মামলার পলাতক আসামীকে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে মনোনীত করেছে আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ৷ অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম মনোয়ার হোসেন ওরফে রাজ কুমার রাজু।
রবিবার (২২ অক্টোবর) মনোয়ার হোসেন ওরফে রাজ কুমার রাজুকে আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মনোনীত করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন আশুলিয়া থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোঃ রাশেদুল হাসান কবির।
অভিযুক্ত মনোয়ার হোসেন ওরফে রাজ কুমার রাজু রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার ডাকরা পূর্বপাড়া পাগলাপাড়া মোড় এলাকার আফসার আলী ওরফে আফসার মেম্বার ছেলে। সে আশুলিয়ার জামগড়া বেরন এলাকায় থাকতো বলে জানা যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চলতি বছরের ২৫ আগস্ট সাভারের সাভারের আমিনবাজার সালেপুর ব্রীজ এলাকা থেকে চালককে অচেতন করে ব্যাটারী চালিত মিশুক গাড়ী ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে জনতার হাতে আটক হয় কামাল মিয়া (২৫) ও রাসেল মিয়া (৩১) নামে দুই ছিনতাইকারী। পরে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। এ সময় কৌশলে পালিয়ে যায় রাজ কুমার রাজু। পরে ভুক্তভোগীর স্ত্রী মাহমুদা আক্তার সুমি (২৭) বাদী হয়ে রাজুকে পলাতক আসামীসহ তিনজনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ আটক দুইজনকে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদেরকে আদালতে পাঠায়। বিজ্ঞ আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ঘটনার একদিন পর ২৬ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টার দিকে আশুলিয়ার ভাদাইল শাহজাহান মার্কেট এলাকা জাকির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে বাগবিতণ্ডার জেরে রাজ কুমার রাজু তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে ভুক্তভোগীর মাথায় কোপ মারে। এতে ভুক্তভোগী ওই ব্যবসায়ী গুরুত্বর জখম হয় এবং প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হতে থাকে। এ অবস্থায় তার সাথে থাকা মারুফ ভুঁইয়া ও এনামুল হোসেন তাদের হাতে থাকা ডেগার ও ছুরি দিয়ে ভুক্তভোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। পরে ভুক্তভোগী মাটিতে পরে গেলে শাহজালাল শাওন, রাহুল, পারভেজ ও ডায়মন্ড তাদের হাতের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে মাটিতে শুয়াইয়া ফেলে।
এ সময় ভুক্তভোগীর ডাকচিৎকারে তার বন্ধু মিজানুর রহমান এগিয়ে আসলে রাজ কুমার রাজু তার হাতে থাকা রামদা দিয়ে তাকেও কোপ মারলে সে বাম হাত দিয়ের ফিরিয়ে দেয়। এতে তার বাম হাত কেটে যায়। পরে তাদের চিৎকারে তাদের পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফেরানোর চেষ্টা করলে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীর ঘরে প্রবেশ করে তাদের মালামাল ভাংচুর করে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রীকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদেরকে উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্ত্রী জুলেখা খাতুন বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
পরে এঘটনায় গত ২৮ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া মোল্লাবাজার এলাকা থেকে মারুফ ভুঁইয়া ও পারভেজ (২৮) কে গ্রেপ্তার করলেও রাজ কুমার রাজুসহ মামলার অন্যান্য আসামিরা এখনো পলাতক রয়েছে বলে জানা যায়।
এর আগে ২০২১ সালের ৩১ মার্চ অন্য মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় হাবিবুর শরীফ (৩৫) নামে এক ব্যক্তিকে ব্যাপক মারধর করে এই রাজু ওরফে রাজ কুমার রাজু। মূলত স্বাক্ষী হওয়ার কারণে জোরপূর্বক সাদা কাগজে সিগনেচার করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হাবিবুরসহ তার সহচরদেরর ওপরে হামলা চালায় এই রাজু সহ বেশ কয়েকজন। পরে এঘটনায় নিজেই বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন হাবিবুর শরীফ (৩৫) নামের ওই ভুক্তভোগী। মামলার পর থেকে পলাতক অবস্থায় রয়েছে এই রাজ কুমার রাজু।
অন্যদিকে যোগ্য ব্যক্তিদের পদ না দিয়ে একজন অপরাধীকে পদ দেওয়ায় দলের ভিতরে নিরব কোন্দল চলছে বলে জানায় অনেকে। যদিও বিভিন্ন কারণে নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করতে রাজি হননি কেউ।
তিন মামলার বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে অভিযুক্ত মনোয়ার হোসেন ওরফে রাজ কুমার রাজুর মুঠোফোনে যোগাযোত করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।