জুমবাংলা ডেস্ক : কাবা দেখবো। দু’চোখজুড়ে এটুকুই আমার স্বপ্ন। তাই গত ৩ মাস যাবৎ কুয়াকাটা সৈকতে পান বিক্রি করছি।’ একটি বালতির মধ্যে ১৭ আইটেমের মশলা নিয়ে ফেরি করে মিষ্টিপান বিক্রি করছেন আর সবার কাছে জীবনের এই শেষ আশার কথা বলছেন ৯০ বছর বয়সী ইমান আলী এখমান্দার।
এক হাতে পানের বালতি অন্য হাতে পাসপোর্টের কপি নিয়ে কুয়াকাটা সৈকতের জিরো পয়েন্ট এলাকায় ঘুরে ঘরে পান বিক্রি করছেন, সঙ্গে পাসপোর্ট দেখিয়ে মক্কা শরীফ নিজের চোখে দেখার আকুতি জানাচ্ছেন এই বৃদ্ধ।
বৃদ্ধ ইমান আলী এখমান্দারের বাড়ি পটুয়াখালীর মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের বিড়াজোড়া গ্রামে। তিনি দুই ছেলের বাবা। তারা পেশায় কাঠমিস্ত্রি। নিজেদেরই খেয়ে-পরে সংসার টেকানো দায়, তাই বাবার এই আশা পূরণ করতে পারছেন না দুই ছেলে।
বৃদ্ধ ইমান আলী এখমান্দারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, আমি পেশায় একজন কাঠমিস্ত্রি ছিলাম। খেয়ে-পরে নিজের থাকার জমিটুকু ছাড়া কিছুই করতে পারিনি। যেটুকু জমি আছে তাতে দুই ছেলে ঘর করে থাকে। আমি পবিত্র কাবাঘরে যাব, হযরত মোহাম্মদকে (সঃ) সালাম দেবো। মনে খুবই আশা কিন্তু অর্থের অভাবে পারছি না।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাস আগে কুয়াকাটায় এসে মসজিদে থাকা শুরু করি আর সবার কাছে হজে যাওয়ার জন্য সাহায্য চাই। কিন্তু তাতে নাকি হজ হবে না, তাই সবাই পরামর্শ দিলো ব্যবসা করতে। সেই পরামর্শ নিয়ে মাত্র দুই হাজার টাকায় মালামাল কিনে এই পান বিক্রি শুরু করি। কুয়াকাটার স্থানীয় লোকজন ও পর্যটকরা পান খেয়ে বেশি টাকা দেয় আবার অনেকে না খেয়েও টাকা দেয়।
তিনি বলেন, গত তিন মাসে ৪০ হাজার টাকা জোগাড় করেছি। তা দিয়ে কিছু টাকা ঋণী ছিলাম পরিশোধ করেছি। বাকি টাকা জমাচ্ছি। ইচ্ছা আছে ঈদের পরই ওমরাহ করতে যাব।
এত টাকা কোথায় পাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কাবাঘর দেখতে চাই, এটা আমার ইচ্ছা। প্রয়োজনে আমি বাড়িটা বিক্রি করে যাবো। আর যদি কোনো বিত্তবান আমাকে কাবাঘর দেখিয়ে সহযোগিতা করেন তাহলে আমার জীবনটা ধন্য হবে।
কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু বলেন, আমরা তাকে দেখছি বেশ কয়েকদিন ধরে। হজ করবেন বলে পান বিক্রি করতে নেমেছেন। পরে জানতে পারলাম তার ছেলেদের ইনকামে তার ভরণপোষণ চলে, কিন্তু হজ করার সামর্থ্য না থাকায় তিনি এই বয়সে পান বিক্রি করছেন। যদি কারো পক্ষে সম্ভব হয়, তাকে হজের ব্যবস্থা করে শেষ বয়সের আশাটা পূরণ করতে পারলে তিনি অনেক খুসি হবেন।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, আমরা এই বৃদ্ধ লোকটাকে প্রথমে সাহায্য ওঠাতে দেখেছি। পরে পান বিক্রি করতে দেখি। পরে জানতে পারি তিনি হজে যাওয়ার আশায় এত কষ্ট করছেন। তিনি যা বলছেন সেটাতো ভালো উদ্দেশ্য, তাকে সবার সহযোগিতা করার দরকার। সূত্র : জাগো নিউজ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।