জুমবাংলা ডেস্ক : পুরো সাতকানিয়াসহ আশপাশের এলাকায় বন্যার ক্ষত ছড়িয়ে আছে এখনো। কিন্তু আবার বইছে বন্যা। এ বন্যা খুশির। অন্ধ হাফেজ আবু জাফর মোহাম্মদ শাকিলের (১৫) বাড়িতে, গ্রামে, উপজেলা এমনকি জেলায়ও খুশির বন্যা।
জন্ম থেকে মাকে দেখেননি, বাবাকে দেখেননি। সুন্দর এ পৃথিবীর কিছুই দেখা হয়নি। কিন্তু পবিত্র কোরআনের আলোতে আলোকিত শাকিল। সেই আলো ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে, বিশ্বের আনাচে-কানাচে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে কোরআনের সুললিত কণ্ঠে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে, পেয়েছেন পুরস্কারও।
রোববার (১৩ আগস্ট) জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অধিকার করে সাতকানিয়া উপজেলার ছদাহা ইউনিয়নের মাওলানা ছগীর শাহ (র.) পাড়ার প্রবাসী আবুল কাশেমের ছেলে অন্ধ হাফেজ আবু জাফর মোহাম্মদ শাকিল।
বাংলাদেশ দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে জনপ্রিয় সব টেলিভিশন, অনলাইন নিউজপোর্টালসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২৯ জুলাই ছদাহায় জন্ম জন্মান্ধ শাকিলের। শাকিলের মা রোকসানা আক্তার ডলি নিয়মিত কোরআন পাঠ করেন। শাকিল মায়ের মুখ থেকে শুনে শুনে ছোটবেলায় কোরআনের বেশ কয়েকটি সুরা মুখস্ত করে ফেলেন। একটু বড় হলে তার বাবা-মা ঘরে মো. ইব্রাহিম নামের একজন হাফেজ রাখেন, যাতে শাকিল কোরআন শরিফ মুখস্ত করতে পারে। ওস্তাদের মুখে শুনে, মোবাইলে রেকর্ড শুনে ধীরে ধীরে পবিত্র কোরআন মুখস্থ করে ফেলেন শাকিল। কয়েক বছর ঢাকার যাত্রাবাড়ি মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসায় পড়া অবস্থায় জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তৃতীয় স্থান অধিকার করে।
মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার হাফেজ নেসার আহমদ আন নাসিরি বলেন, শাকিল খুবই মেধাবী। অন্ধ হয়েও পবিত্র কোরআন শরিফ মুখস্থ করেছে সে। আমি তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
ছদাহা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোরশেদুর রহমান বলেন, শাকিল আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তার গৌরবে আমরা গৌরবান্বিত। পুরো এলাকায় আজ খুশির বন্যা। তাঁকে আমরা সংবর্ধনা দেব।
শাকিলের মা রোকসানা আক্তার জানান, আল্লাহর রহমতে ছোটবেলা থেকে শাকিল কোন কিছু শুনলে তা শিখে ফেলতে পারতো। ছোটবেলা থেকে তার ইচ্ছে ছিল টেলিভিশন ও বড় বড় কোরআন প্রতিযোগিতায় সে অংশ নেবে। আমিও তার জন্য দোয়া করতাম। আল্লাহ আমার ও তার বাবার দোয়া কবুল করেছেন বলে আজকে সে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও আমার ছেলেকে দোয়া করেছেন এবং পুরস্কার দেওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমি আল্লাহর কাছে চাই, আমার ছেলেকে যেন বড় ইসলামিক স্কলারে পরিণত করেন। আমি ছেলের ভবিষ্যতের জন্য সবার কাছে দোয়া চাই।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।