স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের পর থেকেই আলোচনায় হারমানপ্রীত কর। সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডের পর ভারতীয় অধিনায়কের আচরণকে কাঠগড়ায় তুলছে সারা ক্রিকেট বিশ্ব। অধিনায়কের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররাও। তবে এরই মধ্যে আলোচনায় এল হারমানের জীবনের আরেক বিতর্কিত ঘটনা।
ক্রিড়াবিদ হিসেবে একবার পুলিশের সম্মানসূচক চাকরি দেয়া হয়েছিল হারমানপ্রীত করকে। নারী ক্রিকেটের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে ২০১৮ সালে পাঞ্জাব পুলিশে তাকে ডিএসপি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তবে সেখানেও এক বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দেন তিনি।
পাঞ্জাব পুলিশের ডিএসপি পদের জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা দরকার ছিল স্নাতক ডিগ্রি। নিয়মানুযায়ী হারমান তার সার্টিফিকেট জমা দেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পাওয়া চাকরি বলে সেসময় এটা নিয়ে আর কোনো খোঁজখবর করা হয়নি। হারমানও নিয়োগ পেয়ে যান পাঞ্জাব পুলিশে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই জানা যায় হারমানপ্রীতের ওই সার্টিফিকেট আসলে ভুয়া।
ভুয়া সার্টিফিকেটের অভিযোগে এরপর ডিএসপি পদ থেকে হারমানের চাকরি গেছে বলে তখনকার গণমাধ্যমে জানানো হয়েছিল। অবশ্য হারমানপ্রীত কর তার সার্টিফিকেটকে আসল হিসেবে দাবি করেছিলেন। পুলিশে যোগদানের আগে ইন্ডিয়ান রেলওয়েতে চাকরি করেছিলেন হারমানপ্রীত।
শনিবার (২২ জুলাই) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারতের চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ তৃতীয় ওয়ানডের সমাপ্তি হয় টাইয়ে। তাতে ট্রফি ভাগাভাগি করতে হয় দুদলকে। তবে ক্রিকেটীয় রোমাঞ্চের দিনটিকে অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ দিয়ে অস্বস্তিকর করে তোলেন হারমানপ্রীত। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং মাঠের খেলায় তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ বিশ্বক্রিকেটেই আলোচনায় এনেছে তাকে।
রোমাঞ্চকর ম্যাচে আউট হয়ে মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি হারমানপ্রীত। আম্পায়ার তানভীর আহমেদ আউটের ইশারা করলে ব্যাট দিয়ে রীতিমতো স্ট্যাম্প ভেঙে ফেলেন তিনি। এসময় তিনি চোখ রাঙানিও দেখান আম্পায়ারকে। তবে মাঠেই ব্যাপারটা সীমাবদ্ধ থাকলেও চলতো। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ করেছেন হারমান।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে হারমানপ্রীত সরাসরি প্রশ্ন তোলেন আম্পায়ারিংয়ের দিকে। এরপর দুদলের ফটোসেশনের সময়ও বাংলাদেশ দল এবং আম্পায়ারকে কটাক্ষ করেন তিনি। ছবি তোলার সময় তিনি বলেন, ‘শুধু তোমরা কেন, আম্পায়ার তোমাদের ম্যাচ টাই করিয়েছে। আম্পায়ারকেও ডাকো। একসঙ্গে ছবি তুলি।’ এসময় ভারত অধিনায়কের শরীরী ভাষাতেও ছিল তাচ্ছিল্যের ভাব। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি খুবই অস্বস্তিকর হয়ে ওঠায় নিগার তার দলকে নিয়ে ড্রেসিংরুমে চলে যান।
এ ঘটনার পর এর সমালোচনা হয়েছে বেশ। বাংলাদেশ কিংবা অন্যান্য দেশের মতো এবার সেই সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররাও। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের ক্রিকেটার মদন লাল হারমানপ্রীতের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট হয়ে ম্যাচের সময়ে ও ম্যাচের পরে হারমানপ্রীত যে সব আচরণ করেছেন, তার সমালোচনা করেছেন দলটির সাবেক অধিনায়ক আনজুম চোপড়াও।
আইসিসির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো শাস্তি দেয়া হয়নি হারমানপ্রীতকে। তবে মাঠ ও মাঠের বাইরে তার আচরণ বিবেচনায় আনলে ভারতের অধিনায়কের শাস্তি যে নিশ্চিত এটা বলাই যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।