সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জে শিশির শীল (২২) নামের এক হিন্দু যুবকের বিরুদ্ধে কলেজ পড়ুয়া এক মুসললিম তরুণীকে (১৭) অপহরণের অভিযোগ পাওয়া গেছে।। এ ঘটনায় ওই তরুণীর মা বাদি হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- শিশির শীল ওরফে মিঠু, জুবায়ের, শ্যামল শীল, হাবিবুল্লাহ, কণিকা শীল ও মো: রফিক। তারা সকলেই জেলার ঘিওর উপজেলার তরা এলাকার বাসিন্দা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত শিশির শীল ওরফে মিঠু মানিকগঞ্জের গড়পাড়া এলাকার কলেজ পড়ুয়া এক মুসলিম তরুনীকে কলেজে আসা-যাওয়ার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতো। ওই তরুণী প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে অপহরণ করার হুমকি প্রদান করে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও গত ৪ নভেম্বর শিশির শীল কয়েকজন সহযোগীকে সাথে নিয়ে ওই তরুণীকে তার বাড়ির সামনে থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। শিশির শীল ওই তরুণীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ওই তরুণীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করতে অথবা অন্য কোন উদ্দেশ্যে আটক করে রেখেছে।
অনুসন্ধানের এক পর্যায়ে অভিযুক্ত শিশির শীল ও অপহরণের শিকার ওই তরুণীর বিবাহ সংক্রান্ত একটি হলফনামার কপি আসে এই প্রতিবেদকের কাছে। সেই হলফনামায় উল্লেখ রয়েছে, গত ৫ নভেম্বর ওই তরুণী বরিশালের একটি নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে হলফনামার মাধ্যমে ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘোষণা দেন এবং বিবাহের হলফনামায় স্বাক্ষর করেন। বিবাহের হলফনামায় তারা বরিশালের একটি মন্দিরে হিন্দু ধর্ম মোতাবেক বিবাহ সম্পন্ন করার কথা উল্লেখ করেন। এরপর তারা বরিশালের কাঠপট্টি এলাকার একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে।
বরিশালের ওই আবাসিক হোটেলের ব্যবস্থাপক সাব্বির হোসেন শান্ত অভিযুক্ত শিশির শীল ও অপহরণের শিকার ওই তরুণীকে তার পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে তাদের হোটেল থেকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৮ নভেম্বর( বুধবার) অভিযুক্ত শিশির শীল ও অপহরণের শিকার ওই তরুণীকে তার পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে বরিশালের কাঠপট্টি এলাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে উদ্ধার করে মানিকগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক প্রতিমা। এরপর তাদেরকে মানিকগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে এসে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রাতের আধারে এ ঘটনার মিমাংসা করা হয়। এরপর অভিযুক্ত শিশির শীল ও ওই তরুণীকে তাদের নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় অপহরণের শিকার ওই তরুণী ভাইয়ের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পরিবারের মানসম্মানের কথা ভেবে আমরা মামলা করিনি। থানায় বসেই বিষয়টি মিমাংসা করা হয়েছে।
তবে অভিযুক্ত শিশির শীলের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।
মানিকগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক প্রতিমা জানান, মেয়েটির মা একটি নিখোঁজের জিডি করেছিল। মেয়েকে পাওয়ার পর তাদের কোন অভিযোগ না থাকায় বিষয়টি মিমাংসা করে তাদেরকে নিজ নিজ পরিবারের জিম্মায় দেয়া হয়েছে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুর রউফ সরকার বলেন, ওই তরুণীর পরিবার নিখোঁজের জিডি করেছিল। তাকে উদ্ধারের পর তার পরিবারের লোকজনের কোন অভিযোগ না থাকায় তাকে তার পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।