সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শতাধিক মানুষ একত্রিত হয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. গোলাম ইয়াছিন, বাঘুটিয়া আলিম মাদ্রাসার সাবেক সুপার মাওলানা তাজুল ইসলাম এবং ইউনিয়ন পরিষদের সকল ইউপি সদস্যবৃন্দ।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে যমুনা নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে বাজারসহ অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে চারতলা ভবনের দুটি মাদ্রাসাসহ একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে বাচামারা ইউনিয়নের নিজ ভারাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবন সম্পূর্ণ নদীতে তলিয়ে গেছে।
এর আগে, এরআগে জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা ও দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে লিখিত অভিযোগ দেন নদীপাড়ের ভুক্তভোগীরা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে সংবাদও প্রকাশিত হয়। এরপর গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে নৌ উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এবং পাটুরিয়ায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের অপসারণের নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেন জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লাকে।
দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিয়ান নুরেন জানান, ইজারা দেয়া সীমানার বাইরে বালু কাটার সুযোগ নেই। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফরিদপুর অঞ্চলের নৌ-পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “সীমার বাইরে গিয়ে কেউ বালু উত্তোলন করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের সাথে কারো সখ্যতা নেই। আগেও অভিযান চালিয়ে মামলা দিয়েছি।”
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা জানান, “ইজারার সীমানা লঙ্ঘন করে ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। আমরা ইতোমধ্যে অভিযান চালিয়েছি এবং নিয়মিত মামলা দিচ্ছি। এ অভিযান আরও কঠোরভাবে চলবে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রশাসনের কঠোর বক্তব্য কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তবে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি। ফলে নদীভাঙন পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ মে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ইজারা ঘোষণা করার সময় ইজারাদারদের স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া হয়েছিল শর্ত ভঙ্গ করলে তাদের ইজারা বাতিল করা হবে। তবুও নিয়ম অমান্য করে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেনা বলে দাবি করেন স্থানীয়রা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।