লাইফস্টাইল ডেস্ক : ছেলেবেলায় বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠরা বলতেন, বেশি ঘুমোলে নাকি মানুষ মোটা হয়। এ ধারণা কি ঠিক, নাকি পর্যাপ্ত ঘুম ওজন ঝরতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে যে রীতিমতো কাঠখড় পোড়াতে হয় সবাইকে। খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণ থেকে শরীরচর্চা— খেয়াল রাখতে হয় সব দিকেই। কিন্তু ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে ওজন ঝরিয়ে ফেলা যায়, তার চেয়ে বড় সুখবর কি আর কিছু হতে পারে!
সত্যিই কি ঘুমের মধ্যেও ওজন কমানো সম্ভব? আসলে আমরা ঘুমিয়ে থাকলেও ঘুমের মধ্যে আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তাদের মতো কাজ চালিয়ে যায়। ফলে কিছু ক্যালোরিও খরচ হয়। শক্তিও খরচ হয়। তাছাড়া সারা রাত আপনার শরীরে বাড়তি পানি, শ্বাস-প্রশ্বাস এবং ঘামের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাই ‘ওয়াটার ওয়েট’ ঝরে যায়। সেই কারণেই সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে যদি ওজন মাপেন, তা হলে খানিকটা কম দেখাবে আপনার ওজন। এসব কারণেই রাতের পর রাত ভালো ঘুম না হলে শুধু যে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাবে, তা নয়, আপনার ওজনও বেড়ে যেতে পারে।
কীভাবে সম্ভব, চলুন তা জেনে নেয়া যাক-
পর্যাপ্ত ঘুম না হলে আপনার শরীরে মানসিক চাপের হরমোন—মানে কর্টিসলের ক্ষরণ বেড়ে যায়। বেশি মাত্রায় কর্টিসল শরীরে থাকলে তা আমাদের হজমশক্তির ওপর প্রভাব ফেলে। শরীরের বিপাক হারও কমে যায় এসব কারণে। বেশি রাত পর্যন্ত জেগে থাকলে উল্টোপাল্টা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। রক্তে শর্করা মাত্রা বেড়ে যেতে পারে এর ফলে। তাই ওজন বাড়তেও বেশি সময় লাগে না।
ঘুমের মধ্যেও কী করে ক্যালোরি ঝরাবেন?
১. আপনি যদি ওয়েট ট্রেনিং করেন, তা হলে তা সকালের বদলে সন্ধ্যাবেলা করতে পারেন। শরীরের বিপাক হার শরীরচর্চার পর ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বেশি থাকবে। তাই ঘুমের মধ্যেও শরীরে ক্যালোরি বেশি খরচ হবে।
২. বেশির ভাগ মানুষই রাতে খাওয়াদাওয়ার পর ঘুমাতে চলে যান। সঙ্গে সঙ্গে না ঘুমোলেও বিছানায় গড়িয়ে ফোন ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করেন। এই অভ্যাস ছাড়তে হবে। খাওয়ার পর অন্তত ঘণ্টা দুয়েক না ঘুমানোই শ্রেয়। তাতে খাবার হজম ভালো হয়। বিপাক হারও বাড়ে। ফলে ঘুমের মধ্যে ওজন ঝরার কাজ শুরু হয়।
৩. শরীরচর্চা করার পর যদি ঠান্ডা পানি স্নান করতে পারেন, তা হলে শরীরে থেকে ল্যাকটিক অ্যাসিড বেরিয়ে যেতে সাহায্য করবে। আমাদের শরীরে ব্রাউন ফ্যাটের পরিমাণে খুব কম থাকে। কিন্তু এটি সক্রিয় থাকলে শরীরের বিপাকহার বেড়ে অনেকক্ষণ পর্যন্ত ক্যালোরি ঝরাতে পারে। ৩০ সেকেন্ড যদি বরফ-ঠান্ডা পানিতে গোসল করতে পারেন, তা হলে শরীরের ব্রাউন ফ্যাট সক্রিয় হয়ে ঘুমের মধ্যেও ৪০০ ক্যালোরি পর্যন্ত ঝরাতে পারে।
৪. গ্রিন টি শরীরের বিপাক হার বাড়াতে সাহায্য করে। দিনে যদি ৩ কাপ চা খান, তার মধ্যে শেষ কাপটি ঘুমের আগে— তা হলে ঘুমের মধ্যে ৩.৫ শতাংশ বেশি ক্যালোরি ঝরতে পারে। তাই রাতে খাওয়াদাওয়া ও ঘুমানোর মাঝে এক কাপ গ্রিন টিতে চুমুক দিতেই পারেন।
উদ্দাম সাহসী দৃশ্যে ঝড় তুললেন প্রাজকতা, ভুলেও কারও সামনে দেখবেন না
৫. রাত জেগে মোবাইলে ওয়েব সিরিজ় দেখার অভ্যাস অনেকেরই আছে। এই অভ্যাসের কারণে রাতে তিন-চার ঘণ্টার বেশি ঘুম হয় না। ওজন বেড়ে যাওয়ার পেছনে কিন্তু এই অভ্যাস দায়ী। তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। সূত্র আনন্দবাজার।
