জুমবাংলা ডেস্ক : পাবনার সুজানগরে “জয় বাংলা” স্লোগান দিয়ে পুলিশের কাছ থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত আব্দুল ওহাব সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি সাবেক পৌর মেয়র ও সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি পাবনা সদর থানা ও ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামি।
রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার ভায়না ইউনিয়নের মথুরাপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, “দলীয় নেতাকর্মী ও অনুসারীরা পুলিশের ওপর হামলা করে আব্দুল ওহাবকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে আব্দুল ওহাবের বাড়ি-সংলগ্ন মথুরাপুর স্কুলের মসজিদে আছরের নামাজ শেষে বের হলে সুজানগর থানার পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে গাড়িতে ওঠায়। এ সময় পুলিশের গাড়িটি ঘিরে ধরেন বেশ কয়েকজন লোক। তারা আব্দুল ওহাবকে ছেড়ে দিতে বলেন, কিন্তু তাতে পুলিশ রাজি না হলে কয়েকশ লোক জড়ো হয়ে “জয় বাংলা” স্লোগান দিয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে তাকে গাড়ি থেকে জোর করে ছিনিয়ে নেন। এ সময় ধস্তাধস্তিতে আটজন পুলিশ সদস্য আহত হন।
বিষয়টি নিয়ে পাবনার পুলিশ সুপার মো. মোরতোজা আলী খাঁন অনলাইন সংবাদমাধ্যম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, “আব্দুল ওহাব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু দলীয় নেতাকর্মী ও গ্রামের লোকজন তাকে পুলিশের গাড়ি থেকে ছিনিয়ে নিয়ে যান। তাকে পুনরায় ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে। শিগগিরই তাকে গ্রেফতার করা হবে। একইসঙ্গে আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ব্যাপারে সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাবের কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব শেখ মো. আব্দুর রউফ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, “এটা পুলিশের দুর্বলতার প্রকাশ। এত কম পুলিশ সদস্য ওখানে যাওয়া ঠিক হয়নি। আরও শক্তিশালী হয়ে সেখানে যাওয়া উচিত ছিল। এ ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
সুজানগর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির অধ্যাপক মো. হেসাব উদ্দিন বলেন, “পুলিশের গাফিলতিতে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে ছাড়িয়ে নিরো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জও করেনি। বন্দুক দিয়ে গুলিও করেনি। পুলিশ কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা করেনি। অথচ আগে জামায়াত-বিএনপির লোকজনের ওপর কোনো কারণ ছাড়াই লাঠিচার্জ ও গুলি করত।
এ ঘটনায় আমরা হতভম্ব হয়ে যাচ্ছি। একজন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এখনো বাসায় আরাম-আয়েশে দিন কাটাচ্ছেন। নেতাকর্মীদের বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। অথচ পুলিশ আজকে ধরতে গিয়ে ছেড়ে দিতে বাধ্য হলো। পুলিশের কঠোর হওয়া দরকার ছিল। পুলিশে হাসিনার লোক রয়েছে, এটাই আজকের প্রমাণ।”
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।