জুমবাংলা ডেস্ক : চাঁপাইনবাবগঞ্জে মৃদু শীতল হাওয়ায় দোল খাচ্ছে কৃষকের মাঠের আমন ধান। সোনালী রঙের পাকা ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন বইছে আনন্দের বন্যা। আর তাই ধান কাটতে হাতে কাঁচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা।
এদিকে অনেক কৃষক এরই মধ্যে তাদের সোনালী ফসল মাড়াই করে বাজারে বিক্রি করতেও শুরু করছেন। প্রথম দিকে তারা ধানের ভালো দাম পেলেও, সময়ের ব্যবধানে দাম কমতে থাকায় শঙ্কা জেগে বসেছে তাদের মধ্যে। উৎপাদিত ফসলের যথাযথ মূল্য না পেলে চাষাবাদের আগ্রহ কমবে এমনটাই দাবি কৃষকদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি দপ্তরের তথ্য মতে, জেলায় ৫৩ হাজার ৫২০ হেক্টর জমিতে এ মৌসুমে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় ৯ হাজার ৮৫০ হেক্টর, শিবগঞ্জে ৫৫০ হেক্টর, গোমস্তাপুরে ১৬ হাজার ৭৫ হেক্টর, নাচোলে ২২ হাজার ২৩৫ হেক্টর, ভোলাহাটে ৪ হাজার ৮১০ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করেছেন চাষিরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ৫ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছি। ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে মটোর দিয়ে জমিতে এবার পানি দিতে পারিনি। কিছুটা সমস্যা হয়েছিল। উপরওয়ালার অশেষ রহমতে সময়ের বৃষ্টি সময়ে হওয়ায় ধানের শিষ ফুটতে কোনো সমস্যা হয়নি।আমনের ফলন ভালো হয়েছে।’
শিবগঞ্জ উপজেলার কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘এই বছর প্রায় সব কৃষকেরই মাঠেই আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদিত ধানের সঠিকমূল্য না পাওয়ায় অনেক কৃষকই ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছেন। সরকার অনেক কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারন করলেও কৃষক তার যথাযথ মূল্য পান না।’
গোমস্তাপুরের আমিরুল ইসলাম নামের এক কৃষক বলেন, ‘রোগ বালাই তেমন না থাকায় আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ধানের বাজার ঠিক রাখতে সরকারের যথাযথ নজর দেওয়া দরকার। কৃষি পণ্যের দাম বাড়ায়, উৎপাদনেও প্রভাব পড়েছে। উৎপাদিত ফসলের যথাযথ মূল্য না পেলে অনেক কৃষক অন্য ফসল চাষাবাদে ঝুঁকতে শুরু করবেন। বিশেষ করে ধানের বাজার দিন দিন যেভাবে কমতে শুরু করেছে তাতে চিন্তা বাড়ছে সঠিক দাম পাওয়া নিয়ে।’
ধান ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর বলেন, ‘ নতুন ধানের বাজার মূল্য প্রথম প্রথম ঠিক থাকে।এমন কি নতুন ধান কেনার জন্য মিল মালিকদেরও চাহিদা থাকে। সমেয়ের ব্যবধানে ধানের দাম কমতে থাকলে কৃষকরা হতাশ হয়ে যায়। তখন প্রতি মণে তাদের ৩০-৪০ টাকা লোকসান গুনতে হয়।’
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড.পলাশ সরকার বলেন, ‘ জেলায় আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিল ৫৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর। আশানুরুপ ধানও উৎপাদন হয়েছে। বেশ কয়েক দিন আগেই কৃষকরা ধান কাটতে শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত ধান কাটা হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। দেখতে গেলে ধান কাটা প্রায় শেষ পর্যয়ে। কৃষকেরা ধানের ভালো ফলন পাওয়ায় অনেক খুশি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।