জুমবাংলা ডেস্ক : বিধবার প্রতি আসক্ত হয়ে বাপ ছেলে দেওয়ানা। দুজনের সাথেই রয়েছে বিধবার দহরম মহরম সম্পর্ক। বাপ ছেলে উভয়ে করতে চান বিয়ে। পিতা দিতে থাকেন নানান লোভনীয় প্রলোভন। পিতাকে টেক্কা দিয়ে বিধবাকে ঢাকায় পালিয়ে নিয়ে ছেলে করলেন বিয়ে। সেখানে বছর খানেক থাকার পর বাড়িতে এসে ছাড়াছাড়ি। এরপরও বিধবার ঘরে লালসা মেটাতে গিয়ে বাপ খেলেন তার ছেলের হাতে ধরা। অতঃপর মারামারি ভাংচুর, মেডিকেলে ভর্তির থানায় অভিযোগ ইত্যাদি।
এটা কথার ছলে কোন হাস্যকর ঘটনা নয়। বাস্তব ঘটনা। আর এই ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার কেতকীবাড়ী এলাকায়। এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। পিতা পুত্র প্রভাবশালী হওয়ায় ঘটনাটি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিতে একটি পক্ষ মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লেগেছে। এ ঘটনায় ঐ বিধবা বাদী হয়ে পিতা পুত্রসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের পুর্ব বেজগ্রাম এলাকার মৃত পিঞ্জির মামুদের ছেলে জসিম উদ্দিন (৭০), তার ছেলে সেলিম হোসেন (৪৮), সেলিম হোসেনের ছেলে সার্থক (১৯), আঃ ছালামের ছেলে শাকিব (২২) এবং সাফল্য (২৪)।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার কেতকীবাড়ী (নওদাবাস- ১ নং ওয়ার্ড) এলাকায় এক বিধবার প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়েন পার্শ্ববর্তী পুর্ব বেজগ্রাম এলাকার মৃত পিঞ্জির মামুদের ছেলে জসিম উদ্দিন (৭০) নামে এক বৃদ্ধ। তিনি ঐ বিধবাকে বিয়ে করাসহ নানান রকম প্রলোভন দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। বাপ ছেলে উভয়ের সাথে বিধবার রয়েছে দহরম মহরম সম্পর্ক। এদিকে জসিম উদ্দিনে ছেলে সেলিম হোসেন (৪৮) এর সাথে বিধবার পরকীয়া সম্পর্ক থাকায় ২৫/১০/২০১৭ ইং তারিখে তারা দুজনে ঢাকায় পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। সেখানে এক বছর অতিবাহিত করার পর বৃদ্ধ জসিম উদ্দিন তার ছেলে সেলিম হোসেনকে ফোন করে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর বৃদ্ধ জসিম উদ্দিনের চাপে সেলিমের সাথে ঐ বিধবার ছাড়াছাড়ি হয়।
এর এক মাস পর ঐ বিধবা ঢাকা থেকে বুড়িমারীতে এসে পাথর ভাঙ্গার কাজ করে প্রায় সময় গ্রামের বাড়িতে আসে। এসময় সেলিম হোসেন বিধবার সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে জানতে পারে সে গ্রামের বাড়িতে আছে।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টার দিকে ঐ বিধবা টিউবওয়েল গেলে সেই সুযোগে সেলিম হোসেন তার স্বয়ন ঘরের ভিতরে ঢুকে। বিধবা ঘরে ঢুকে চিল্লাচিল্লি করলে সেলিম হোসেম তার মুখ চিপে ধরে ঘরের দরজা লাগিয়ে দিয়ে বিধবার সাথে হুড়াহুড়ি করতে থাকে।
এদিকে সেলিম হোসেনকে বাড়িতে দেখতে না পেয়ে তার ছেলে সার্থক, ভাতিজা শাকিব ও সাফল্য লাঠিসোঁটা নিয়ে ঐ বিধবার বাড়িতে গিয়ে তার ঘরে দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে বিধবাকে প্রচন্ড মারধোর করে সেলিম হোসেনকে সাথে নিয়ে যায়। তাদের মারধরে বিধবা মরার উপক্রম হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করায়।
পরে এ ঘটনায় বিধবা বাদী হয়ে ৫ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়াও উক্ত জসিম উদ্দিনসহ তার ছেলের বিরুদ্ধে এমন আরও অনেক অপকর্মে থাকলেও তারা প্রভাবশালী হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস কেউ পায়না। এদিকে একটি পক্ষ টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা যা অপকর্ম করছে এটা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। তাদের পিতাপুত্রের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিৎ। খবর পেয়ে ঘটনার সত্যতা জানতে কয়েকজন সাংবাদিক প্রথমে ঐ বিধবার বাড়িতে গেলেও তিনি দেখা করেননি। পরে অভিযুক্তদের বাড়িতে গেলে তারা উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ করেন।
নওদাবাস ইউনিয়নের ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্যের স্বামী মোঘল মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে আমিসহ অনেকেই সেদিন রাতে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম।
টংভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম হোসেন বলেন, এবিষয়ে লোক মুখে শুনলেও কেউ আমার কাছে আসেনি। হাতীবান্ধা থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি শাহ আলম বলেন, এবিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।