জুমবাংলা ডেস্ক : যশোরের শার্শার নাভারণে একটি কওমি মাদ্রাসায় ছাত্রীদের শয়নকক্ষে ছিল সিসি ক্যামেরা। তার মনিটর ছিল শিক্ষকের কক্ষে। এ ঘটনায় মাদ্রাসাটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।
শনিবার (১২ এপ্রিল) সন্ধ্যার মধ্যে ওই কওমি মাদ্রাসার সব ছাত্রীদের নিজেদের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে বোর্ডের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মাদ্রাসাটির ভবিষ্যৎ কী হবে তা বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড পরে সিদ্ধান্ত নেবে।
একইসঙ্গে এখন থেকে দেশে মেয়েদের আর কোনো কওমি মাদ্রাসায় সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা যাবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছেন বোর্ডের কর্তারা।
শুক্রবার (১১ এপ্রিল) শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে এক ম্যারাথন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে মাদ্রাসাটির পরিচালক মাওলানা তরিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন। তিনি নিজের ভুল স্বীকার করে একটি লিখিত চিঠি দিয়েছেন।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান এই তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৫টায় তার দপ্তরে ওই সভা শুরু হয়। সভায় যশোর থেকে প্রায় ৩০ জন মাওলানা অংশ নেন। তারা কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সদস্য। উল্লেখিতদের মধ্যে ছিলেন- কওমি বোর্ডের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা আনোয়ারুল করিম যশোরী এবং মাওলানা নাসিরুদ্দিন।
উপস্থিত ছিলেন- যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নাভারণ সার্কেল) নিশাত আল নাহিয়ান।
ইউএনও কাজী নাজিব হাসান আরো জানান, সভার শুরুতে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের নেতারা বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে খুবই বিব্রত। এই অনাকাঙ্খিত ঘটনা যাতে আর ভবিষ্যতে না ঘটে সে ব্যাপারে বোর্ডের পক্ষ থেকে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণে ৫তলা বিশিষ্ট ওই কওমি মাদ্রাসায় মেয়েদের শয়নকক্ষে দুটি সিসি ক্যামেরা ছিল। এতে তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ে। বিষয়টি মেয়েদের কাছ থেকে জানার পর একজন অভিভাবক প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান, যশোরের নাভারন সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান এবং শার্শা থানা পুলিশের ওসি কে এম রবিউল ইসলাম সরেজমিনে গিয়ে নারী পুলিশ সদস্যদের দিয়ে ৯ এপ্রিল ওই দুটি ক্যামেরাসহ মাদ্রাসাটিতে থাকা ১৬টি ক্যামেরা এবং মনিটর জব্দ করেন। জব্দ করা হয় ক্যামেরার মেমোরিকার্ড।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নিশাত আল নাহিয়ান বুধবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, জব্দ ক্যামেরায় এক মাসের ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তা ব্যাপক আলোচনায় আসে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।