জুমবাংলা ডেস্ক: বিগত ঈদুল ফিতরে সারাদেশে যত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার একটা বড় অংশের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল মোটরসাইকেল। ঈদ বা উৎসব ছাড়াও অন্য সময়েও দেশের মহাসড়কগুলোতে সিংহভাগ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী থাকে মোটরসাইকেল। এমন পরিস্থিতিতে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে দেশের মহাসড়কগুলোতে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। তবে যেসব জাতীয় মহাসড়কের পাশে ‘সার্ভিস রোড’ রয়েছে, সেসব মহাসড়কের সার্ভিস রোডে মোটরসাইকেল চলতে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছে সংস্থাটি।
রবিবার (১৯ জুন) বিআরটিএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় এসব সুপারিশ করা হয়।
আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রীদের যাতায়াত নিবিঘ্ন করা এবং দুর্ঘটনা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বলা হয়, বিগত তিনটি ঈদুল ফিতরের তুলনায় সর্বশেষ ঈদুল ফিতরে সড়ক দুর্ঘটনা কিছুটা বেড়েছে। বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদন এবং গণমাধ্যমের তথ্য পর্যালোচনায় সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ার কারণ হিসেবে ঈদের সময় মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচলকে দায়ী করা হয়েছে।
সবশেষ ঈদুল ফিতরের আটদিনে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ১০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে প্রতিদিন গড়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৩ জন। এর আগের ঈদুল ফিতরের তুলনায় গত ২৮ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত এবারের ঈদুল ফিতরের সময় সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে তুলনামূলক বেশি। কর্মশালায় গত চারটি ঈদুল ফিতরের সময়কার সড়ক দুর্ঘটনা ও হতাহতের তথ্য উল্লেখ করা হয়।
বিআরটিএর তথ্য বলছে, ২০১৯ সালের ঈদুল ফিতরের সময় ৬০টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। প্রতিদিন গড়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছিলেন আরো ১৬৫ জন। একইভাবে ২০২০ সালের ঈদুল ফিতরে ৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬০ জনের মৃত্যু হয়। প্রতিদিন গড়ে মারা যান ৮ জন। ওই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন ৫৩ জন।
২০২১ সালের ঈদুল ফিতরের সময় সারাদেশে ৫৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৫৮ জন। প্রতিদিন গড়ে ৭ জনের মৃত্যু হয়। আর সর্বশেষ চলতি বছরের ঈদুল ফিতরে সারাদেশে ১০৬টি দুর্ঘটনায় ১০৬ জনের মৃত্যু হয়। আহতের সংখ্যা ১৫৬।
মহাসড়কে দুর্ঘটনার জন্য একাধিক কারণ চিহ্নিত করেছে বিআরটিএ। এগুলো হলো- মহাসড়কে অসতর্ক, দ্রুত ও বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, চালকের অননুমোদিত বা ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং, পথচারীর অসাবধানতা, যত্রতত্র পারাপার ও পথচারীরা রাস্তা চলাচলে ডানপাশ ব্যবহার না করা, মহাসড়কে ধীর গতির যানবাহন ও নিবন্ধনবিহীন যানবাহন চলাচল, মোটরসাইকেলে অতিরিক্ত আরোহী বহন, হেলমেট ব্যবহার না করা, চালকের অসচেতনতা ও ট্রাফিক আইন না মানা, সাইড রোড থেকে মূল সড়কে প্রবেশের ক্ষেত্রে মূল সড়কের গাড়িকে অগ্রাধিকার না দেয়া ও মহাসড়কে ট্রাফিক সাইন, রোড মার্কিং স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী না থাকা।
দুর্ঘটনা রোধে জাতীয় মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা, দ্রুত ও বেপরোয় গতিতে চলা মোটরযান এবং অননুমোদিত ওভারটেকিং করা মোটরযানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া, জাতীয় মহাসড়কে হিউম্যান হলার, থ্রি-হুইলারসহ নছিমন ও করিমনের মতো বাহন চলাচল বন্ধ করা, রাস্তা পারাপারে পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি, চালকদের প্রশিক্ষণ, খেলাপি ও কাজগপত্রবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোড়ালো করা এবং জাতীয় মহাসড়কে দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সুপারিশ করেছে বিআরটিএ।
সিলেটে বন্যার্তদের জন্য এক দিনে ৭০ লাখ টাকা পেলেন ব্যারিস্টার সুমন (ভিডিও)
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।