জুমবাংলা ডেস্ক : নাটোরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাড়ি থেকে চারটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে শহরের কান্দিভিটুয়া মহল্লার আলোচিত “জান্নাতি প্যালেসের ২য় ও তৃতীয়তলার বেলকনি থেকে মৃতদেহগুলো পাওয়া যায়।
নিহত দুই জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এদের একজন নাটোর সিটি কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে এসএসসি পরীক্ষার্থী মিদদাত হোসেন আকিব (১৬)। তিনি নাটোর সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। তাঁর বাবা দেলোয়ার হোসেন একই কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারী। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হয়ে তিনি কারাগারে আছেন।
অপরজন শহরের বড়গাছা এলাকার লেদ কারখানা শ্রমিক মোহন। এই মরদেহগুলোর মধ্যে মিদদাত হোসেন আকিব ও মোহনের মরদেহ তাদের স্বজনরা বাড়িতে নিয়ে গেছে। আকিব ও মোহনের সজনরা তাদের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এছাড়া অন্য দুইজনের মরদেহ ঘটনাস্থলেই ভষ্মীভূত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। তাদের পরিচয় সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মৃতদেহগুলো আগুনে পুড়ে প্রায় কঙ্কাল হয়ে গেছে। তাদের ধারণা, সোমবার যখন সংসদ সদস্যের বিলাসবহুল বাড়িটি বিক্ষুব্ধ জনতা পুড়িয়ে দিচ্ছিল তখন আকিবসহ মৃতরা সেখানে যাওয়ার পর আর বের হতে পারেনি। পরে আগুনে পুড়ে মারা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই চারজনই আন্দোলনকারীদের সাথে সোমবার বিকালে শহরের কান্দিভিটা এলাকায় এমপি শিমুলের আলোচিত “জান্নাতি প্যালেস” নামের বাড়িতে গিয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করার সময় দগ্ধ হয়ে মারা যায়।
আজ মঙ্গলবার সকালে উৎসুক জনতা ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি দেখতে গিয়ে আগুনে অঙ্গার হওয়া মরদেহগুলো দেখতে পায়।
নিহতের ছাত্র আকিব হোসেনের মামা তুহিন ইসলাম জানান, সোমবার বিকালে আকিব হোসেন বাড়ি থেকে শহরে বের হন। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। মঙ্গলবার সকালে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের পুড়ে যাওয়া বাড়ি দেখতে যাওয়া একজন মহিলা তিনতলার বেলকনিতে একটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে তারা সেখানে গিয়ে মৃতদেহটি আকিবের বলে শনাক্ত করেন, পরে তার মরদেহ নিয়ে যায় স্বজনরা।
নাটোর সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, তারা এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানেন না। খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, আন্দোলনকারীরা হামলা চালানোর কিছু আগে পর্যন্ত এমপি শিমুল এই বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তবে তিনি নিরাপদে বাড়ি ছেড়েছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সেনাবাহিনী প্রধান জাতীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়া পর্যন্ত শিমুলকে তার কিছু কর্মী সমর্থকদের নিয়ে এই বাড়িতেই অবস্থান করতে দেখা গেছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
এছাড়াও আগুন দেওয়া হয় নাটোর আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা সাবেক সংসদ সদস্য শংকর গোবিন্দ চৌধুরীর বাসভবন শংকর ভবনে ভাংচুর ও লুটপাট সহ অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় শংকর চৌধুরীর মেয়ে নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি এই বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। স্থানীয়রা তাকে সবার নজর এড়িয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়।
এছাড়া নাটোরের সিংড়া উপজেলা সদরে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের বাসভন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভাংচুর ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে নাটোর শহরের কান্দিভিটা এলাকাস্থ জেলা আওয়ামী লীগ অফিস।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।