জুমবাংলা ডেস্ক : ভাগ্য পরিবর্তনে বিদেশ গিয়েছিলেন কাজী ফিরোজ আহমেদ। ভাগ্য সহায় হয়নি বলে ফিরে এসেছেন দেশে। ৫ বছর ধরে করছেন গরু মোটাতাজা। এবছর হাটে উঠিয়েছেন ৭৫টি কোরবানিযোগ্য গরু। তার মধ্য থেকে এবার হাট কাঁপাচ্ছে তার সব থেকে বড় গরু ২০ মণের ‘টাইটানিক’। ক্রেতারা ৩ লাখ ৪০ হাজার টাকা দাম বললেও ৪ লাখ বিক্রির আশা করছেন তিনি।
জানা যায়, নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা কাজী ফিরোজ আহমেদ পতিত জমিতে ৫ বছর আগে যাত্রা শুরু করেন কাজী অ্যাগ্রো নামে খামারের। প্রতিবছর বড় বড় গরু বিক্রির সুনাম আছে তার। প্রাণিসম্পদ মেলায় একাধিকবার পুরস্কার পেয়েছে কাজী ফিরোজ আহমেদের খামারের গরু।
শুক্রবার (১৪ জুন) বিকালে কবিরহাট উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের বাটইয়া গরু বাজারে ২০ মণের ‘টাইটানিক’কে তোলেন ফিরোজ। বিশাল আকৃতির গরুটিকে দেখতে ভিড় জমান হাটে আসা ক্রেতারা।
মো. আমির হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, বিশাল আকৃতির গরু এবছর আর দেখিনি। টাইটানিক নামের সাথে কাজের মিল আছে। দেখতে মাশাআল্লাহ। ন্যায্য দাম মিলুক এই কামনা করছি। তবে টাইটানিককে নোয়াখালী না রেখে ঢাকায় নিয়ে গেলে বেশি দাম পেতেন।
কাজী অ্যাগ্রোতে কাজ করা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ২০ জন খামারে চাকরি করি। টাইটানিক আমাদের খামারের সব থেকে শান্ত গরু। সে আমাদের আদরের। আমরা দেশীয় খাদ্য দিয়ে গরুটিকে লালন পালন করেছি। ভালো দাম পেলে আমাদের ভালো লাগবে। মালিক খুশি থাকলে আমরা খুশি।
গরুর মালিক কাজী ফিরোজ আহমেদ বলেন, ২২০টি গরু আমার খামারে আছে। এবছর ৭৫টি কোরবানিযোগ্য বলে বিক্রি করছি। এর মধ্যে টাইটানিক সবার থেকে বড় গরু। ২০ মণের এই গরুর দাম চেয়েছিলাম ৫ লাখ। ক্রেতারা ৩ লাখ ৪০ হাজার পর্যন্ত বলেছেন। আসলে বড় গরুর কদর সবাই বুঝে না। ঢাকা হলে আমার গরুটি ভালো দাম পেতাম। তারপরও আমি ৪ লাখ টাকা হলে বিক্রি করে দেবো।
কাজী ফিরোজ আহমেদ আরও বলেন, ৫ বছরে আমার খামার থেকে অনেক বড় গরু বিক্রি হয়েছে। আমি প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে একাধিকবার পুরস্কার পেয়েছি। আমি দেশীয় পদ্ধতিতে গরু লালন পালন করি। আমার গরুর মাংসের স্বাদ অন্যরকম। বিদেশ ফেরত আমি খামারে মনোনিবেশ করে ভালো আছি। আশা করি তরুণরাও খামারে আস্থা রাখলে ভালো করতে পারবে।
সিরাজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মিকন বলেন, কাজী ফিরোজ আহমেদ দেশে খামার করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তিনি ভালো মানের খামারি। তাকে দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। ভাগ্য পরিবর্তনে তিনি সফলতার পাশাপাশি অনেকের কর্মসংস্থান করেছেন। আমি তার সফলতা কামনা করছি।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তাসলীমা ফেরদৌসী বলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় প্রাণিসম্পদে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখানে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, হাঁস-মুরগি পালন করা হয়। এছাড়াও আধুনিক খামার করে উদ্যোক্তারা ভালো করছেন। প্রাণিসম্পদ অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় খামারিরা লাভবান হচ্ছেন। কাজী ফিরোজ আহমেদ সফলতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা সর্বদা খামারিদের পাশে আছি। যেকোনো প্রয়োজনে ছুটে যাই। তাদের সফলতা আমাদের দেশের অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, হাটে গরু কেনার পাশাপাশি খামারে লাইভ ওয়েটে গরু কেনায় মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। নোয়াখালী জেলায় মোট ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৮টি গবাদি পশু রয়েছে। তারমধ্যে আমাদের চাহিদা আছে ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮৩টির। জেলার চাহিদা পূরণ করে প্রায় ৩০ হাজার ৩৯৫টি গবাদি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।