জুমবাংলা ডেস্ক : মানিকগঞ্জে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের চাষিরা এখন মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ জেলার শিবালয় উপজেলার যমুনা নদী ও হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর পলিমাটির কারণে এ অঞ্চলে মুড়িকাটা পেঁয়াজেের আবাদ বেড়েছে। গত কয়েক বছরে অনুকূল পরিবেশ ও চাষ উপযোগী মাটি হওয়ায় এ দুই উপজেলায় ফলনও বেড়েছে। চলতি বছরও লাভের আশায় চাষিরা বিঘা বিঘা জমিতে চাষ করছেন এই পেঁয়াজ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিবালয়ে যমুনা নদীর চরাঞ্চল আলোকদিয়া, ত্রিশুণ্ডী, ঢালারচর, কনাইদিয়া, চরশিবালয়, কুইশ্যাহাটা, নালী, রূপসা, মাচাইন এবং হরিরামপুররের ঝিটকা, ধুচুরিয়া, গোপিনাথপুর, আজিমপুর, ধুলসুরা, বেপারী পাড়াসহ প্রায় সকল চরাঞ্চলে এই পেঁয়াজের চাষাবাদ বেশি হয়।
মুড়িকাটা পেঁয়াজ আবাদ করতে প্রয়োজন হয় ছোট পেঁয়াজের। এই পেঁয়াজ আবাদে বিঘা প্রতি মোট খরচ হয় ৩০/৩৫ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও ফলন ভাল হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৪০/৫০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। কম সময়ে অধিক ফলন হওয়ায় এ পেঁয়াজ চাষ লাভজনক। আবাদের শুরু হতে আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে এই পেঁয়াজ বাজারজাত করা যায়।
চর শিবালয় এলাকার মনু মিয়া বলেন, মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষ লাভজনক হওয়ায় আবাদ করতে ছোট পেঁয়াজ আগেই সংরক্ষণ করেছি। ফলে বাজার থেকে ছোট পেঁয়াজ কেনার টাকা বেঁচে যাবে, লাভ বেশি হবে। গত বছর আশি শতাংশ জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ করেছিলাম। চলতি বছর একশো শতাংশ জমিতে আবাদ করবো। এরমধ্যে ৪০ শতাংশ জমিতে আবাদ করা হয়েছে। বাকি জমিতে আবাদের প্রক্রিয়া চলছে।
শিবালয়ের পেঁয়াজ চাষি আব্দুল আজিজ বলেন, চলতি বছর প্রায় চল্লিশ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করেছি। আবাদ করতে বাজার থেকে চব্বিশ হাজার টাকার ছোট পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। তিনমাসে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ঘরে তুলতে আরো প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। আবহাওয়া অনূকূল থাকলে ৫০ থেকে ৫৫ মণ পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারবো।
গোপীনাথপুর এলাকার রুস্তম ব্যাপারি বলেন, আবহাওয়া অনূকূলে থাকায় চলতি বছর মুড়িকাটা পেঁয়াজের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। বাজার দর ভালো হলে লাভবান হবো। প্রতি বিঘা জমিতে ৫০ মণের মতো মুড়িকাটা পেঁয়াজ পাওয়া যায়। তেমন শ্রমিক খরচের প্রয়োজন না হওয়ায় এ পেঁয়াজ আবাদ লাভজনক।
ধুলসুরা এলাকার চাষি বিল্লাল মিয়া বলেন, বাজারে পেঁয়াজের দাম চড়া। মুড়িকাটা পেঁয়াজ ভালো দামে বিক্রি করা যায়। এ আবাদে সেচ, শ্রমিক, সার ও কীটনাশক খরচের তেমন প্রয়োজন পড়ে না। খরচ কম ও বাজারদর ভালো হওয়ায় দিন দিন মুড়িকাটা পেঁয়াজের আবাদ বেড়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ জানান, বাজারে পেঁয়াজের দাম বেশি হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষিরা মুড়িকাটা পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন। এবার ধারণার চেয়ে বেশি জমিতে এই পেঁয়াজ আবাদ হবে বলে মনে হচ্ছে। তিনি আশা করছেন এবার এই পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।