জুমবাংলা ডেস্ক : পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসা জাহিদ-৩ লঞ্চ থেকে নদীতে পড়ে নিখোঁজ শিশু জুয়েলকে দুই ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার করেছে জেলেরা। রোববার (৩১ জুলাই) দুপুর সোয়া দুইটার দিকে পটুয়াখালীর আগুনমুখা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটিকে উদ্ধারে কোনো সহায়তা না করেই ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গিয়েছে লঞ্চটি। উদ্ধার হওয়া বারো বছর বয়সী জুয়েল বর্তমানে পটুয়াখালীর পানপট্টি এলাকার ঘের মালিক নিজাম মিয়ার হেফাজতে রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম শওকত আনোয়ার ইসলাম।
লঞ্চের বাবুর্চি মো. শামিম ইসলাম জানান, জুয়েলের দেশের বাড়ি শরীয়তপুর জেলায়। ওর বাবার নাম আমি জানি না। আগে অন্য লঞ্চে কাজ করছিল। ঢাকার সদরঘাটে বসে কয়েকদিন আগে আমার সাথে কাজ করতে চেয়েছিল। তারপর থেকে আমার সাথে সহকারী হিসেবে কাজ করছে জুয়েল।
তিনি আরও বলেন, রোববার (৩১ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে রাঙ্গাবালীর কোড়ালিয়া ঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। প্রায় আধা ঘণ্টা পর জুয়েল গোসল করতে লঞ্চের পিছনে যায়। যাওয়ার সময় ওকে বার বার নিষেধ করেছি সাবধানে গোসল করিস, নদীতে কিন্তু স্রোত বেশি। কিছুক্ষণ পরে ওকে না দেখতে পেয়ে ডাকাডাকি করি। এক পর্যায়ে অনেক দূরে ওকে ভাসতে দেখি। তখন পর্যন্ত লঞ্চটি থামানো ছিল কিন্তু নদীতে স্রোতের কারণে উল্টো দিকে যাওয়া সম্ভব হয়নি। কিন্তু ওর আশপাশেই নৌকা দেখতে পেয়েছি।
বিকালে সুপারভাইজার বলছে যে, জুয়েলকে পাওয়া গেছে। লঞ্চের সুপারভাইজার কামরুল ইসলাম জানান, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি লঞ্চটি ঘুরিয়ে জুয়েলকে উদ্ধার করতে কিন্তু আগুনমুখা নদীর পূর্ব পাশ দিয়ে আসার সময় স্রোতের গতি ছিল অনেক বেশি। ওই স্রোতের কারণেই উল্টো পথে লঞ্চটিকে ঘুরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়নি।
সুপারভাইজার আরও বলেন, তাৎক্ষনিকভাবে আমরা পানপট্টি, কোড়ালিয়া ঘাটের অনেকের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি যে, জুয়েলকে কোনো জেলে পেয়ে থাকলে তাদের জিন্মায় যেন রেখে দেয়। পরে বিকেলের দিকে পানপট্টি থেকে ঘের মালিক নিজাম ভাই ফোন দিয়ে আমাকে জানায় যে, জুয়েলকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করে তার জিম্মায় রাখা হয়েছে।
ঘের মালিক নিজাম উদ্দিন জানান, পানপট্টি এলাকার রফেজ মাদবরের ছেলে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আগুনমুখা নদীর মাঝখান থেকে জুয়েলকে একটি প্লাস্টিকের বালতি ধরে ভাসা অবস্থায় উদ্ধার করে তার নৌকায় তুলে। পাঁচটার দিকে পানপট্টি ঘাটে জুয়েলকে নিয়ে আসা হয়। পরে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দিয়ে আমার হেফাজতে রাখা হয়েছে। বর্তমানে ও ভালো আছে। তবে অনেক ক্লান্ত।
গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ এসএম শওকত আনোয়ার ইসলাম জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি। শিশুটি বর্তমানে পানপট্টি ঘের মালিক নিজামের জিম্মায় আছে। তারপরেও কেন পড়ে গেল সে বিষয়েও আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।