লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগানোর ঘটনায় মো. রুবেল (৪১) নামে এক যুবক গ্রেপ্তার হয়েছে। সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত এ কে এম শাহজাহান কামালের এপিএস পরিচয়দানকারী শিমুল চক্রবর্তী ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে দিয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি ও নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে এ ঘটনাটি ঘটানো হয় বলে জানা যায়।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বের) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আবু তারেক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগুন দেওয়ার ঘটনায় ১৩ ডিসেম্বর সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মমর্তা ফারুক হোসাইন বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
গ্রেপ্তার রুবেল লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর এলাকার প্রয়াত আবুল হাশেমের ছেলে ও সদর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল হাকিমের ভাই। তিনি বিদ্যুৎ অফিসের সাবেক গাড়ি চালক। তার ভাই আজিজ ছাত্রলীগ করায় ৩ মাস আগে তাকে চাকরি থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়। চাকরিকালীন সময়েই সাবেক মন্ত্রীর এপিএস শিমুলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ট সম্পর্ক তৈরি হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসপি জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফসিল ঘোষণার পর জনগণের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি ও নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে সাবেক মন্ত্রীর এপিএস শিমুল ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে রুবেলকে আগুন লাগানোর প্রস্তাব দেয়। এতে রুবেল রাজি হয়। পরে তিনি ১১ ডিসেম্বর বিকেলে নির্বাচন কার্যালয়ে যান। এদিন সন্ধ্যায় শিমুল তার বিকাশে ২ হাজার টাকা পাঠায়। পরে তিনি স্টেডিয়ামের সামনের একটি দোকান থেকে ১ লিটার পেট্রোল নেন। একপর্যায়ে গভীর রাতে মাস্ক পড়ে নির্বাচন কার্যালয়ে ঢুকে নিচ তলায় স্টোর রুমের জানালা খোলা পেয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন রুবেল।
এসপি আরও জানান, আগুন লাগাতে গিয়ে তার ডান পাশে কানের নিচে ও ডান পাশের দাড়ির কিছু অংশ পুড়ে যায়। এরপর মোবাইল ফোন দিয়ে তিনি আগুন লাগানোর দৃশ্যের ছবি তুলে (সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়) দৌড়ে গেইট টপকে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। অফিসে সিসি ক্যামেরা আছে বিষয়টি বুঝতে পেরে ফুটেজ দেখে তাকে যেন কেউ চিনতে না পারে সেজন্য বাসায় গিয়ে তার পরনে থাকা জামা-কাপড় আগুনে পুড়িয়ে ফেলে। ওইদিন বিকেলেই শিমুল বিকাশে তাকে বাকি ৮ হাজার টাকা পাঠায়। আসামিকে গ্রেপ্তারের পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী এবং দেখানো মতে নির্বাচন ভবনের বাউন্ডারি প্রাচীরের উত্তর পাশের নিচু জমি থেকে পেট্রোল নিয়ে আসা পানির (জীবন) বোতলটি উদ্ধার করা হয়।
প্রথমবারের মতো বিচ্ছিন্ন কান পায়ে প্রতিস্থাপন, আবার যথাস্থানে স্থাপন
এসপি আবু তারেক জানান, রুবেলের মোবাইল জব্দ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে সে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। তার মোবাইল থেকে ঘটনার সময় তোলা আগুন ধরানোর স্থিরচিত্র পাওয়া যায়। তার মোবাইল কথোপোকথন পর্যালোচনা ও জিজ্ঞাসাবাদে জেলা খাদ্য গুদাম ও এলজিইডি অফিসে আগুন লাগানোর পরিকল্পনার বিষয়টিও জানা যায়। যে দুটি বিকাশ নাম্বার থেকে তাকে টাকা পাঠানো হয়েছে তাদেরও সনাক্ত করা হয়েছে। নির্দেশদাতা ও অন্যান্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।



