জুমবাংলা ডেস্ক : চুরির অভিযোগে জুলহাস (৩১) ও বিল্লাল হোসেন (২৬) নামে দুই সহোদরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সাভার ও চাঁদপুর থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
তাদের কাছ থেকে এক জোড়া হাতের চুরি, এক জোড়া কানের দুল, একটি চেইন এবং গলিত রূপান্তরিত স্বর্ণসহ মোট ৮ ভরি ১০ আনা স্বর্ণ এবং বিভিন্ন ধরনের চাবি, রেঞ্জসহ চুরি করার বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি মিরপুর মডেল থানার আহাম্মেদনগরে জনৈকা সিরাজুম মুনীরার বাসার তালা ভেঙে আনুমানিক ২৪ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ ৬০ হাজার টাকা চুরি হয়। পরে সিসিটিভি দেখে জুলহাস বিল্লাল সহোদরকে শনাক্ত করে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ । পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল সাভার গেন্ডা বাস স্টেশন থেকে বিল্লাল হোসেন এবং তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চাঁদপুরের মতলব থেকে জুলহাসকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া চোরাই এসব স্বর্ণ রাখার অভিযোগে লিটন বর্মণ নামে এক স্বর্ণ দোকানদারকেও গ্রেফতার করে পুলিশ ।
ভোলার লালমোহন উপজেলার আবু কালামের ছেলে জুলহাস ও বিল্লাল । চুরি শুরু করে সেই ছোটবেলা থেকেই। দুইজনে চুরি শুরু করে ২০০৮ সাল থেকে। তখন থেকে আজ ১৫ বছর ধরেই চুরি করছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, এই ১৫ বছরে তারা দুই শতাধিক চুরি করে। চুরি করেই তারা অন্য জেলায় চলে যায়। ফলে অধিকাংশ ঘটনায় তারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। এতগুলো চুরি করলেও তারা ধরা পড়ে ১০ বারের মতো। আর মামলা হয়েছে মাত্র ৩টি। অন্যান্য সবাই সবকিছু চুরি করলেও জুলহাস বিল্লাল শুধু স্বর্ণ ও নগদ টাকা চুরি করে। কারণ এই দুইটি সহজেই বহনযোগ্য।
সাধারণত সব চোর রাতের বেলা চুরি করলেও ব্যতিক্রম এই দুই সহোদর। তারা চুরি করে দিনের বেলা। দিনের বেলা সাধারণত যে সময়টাতে বাচ্চারা স্কুলে থাকে সেই সময়টাকেই তারা চুরির জন্য বেছে নেয়। সেই সময় ঘরের পুরুষ সদস্যরা অফিসে থাকে। আর মহিলা সদস্যরা বাচ্চার স্কুলে থাকে। ফলে বাসা পুরো ফাঁকা থাকে। গাড়ি চালানোর সুবাদে আগে থেকেই এমন একটি বাসা টার্গেট করে বিল্লাল । পরে জুলহাসসহ এসে টার্গেট সেই বাসায় চুরি করে।
দুই ভাইয়ের মধ্যে জুলহাস বড়, বিল্লাল ছোট। বয়সে ছোট হলেও চুরিতে বড় বিল্লাল। মাত্র ১১ বছর বয়স থেকেই চুরি শুরু করে বিল্লাল । তখনও শুধু স্বর্ণ আর টাকা চুরি করত সে। পরে তার কাছ থেকেই চুরি শেখে জুলহাস। দুই ভাই মিলে চুরি করলে বিল্লাল সবসময়ই বাসা টার্গেট করে এবং পাহারায় থাকে। আর চুরি করে জুলহাস।
জুলহাসের শ্বশুর মো. আলাউদ্দিন। তিনি থাকেন চাঁদপুরের মতলবে। প্রতিবার চুরি করার পরপরই শ্বশুরবাড়ি চলে যায় জুলহাস। জামাইয়ের এই চুরির কথা শ্বশুরের অজানা নয়। কিন্তু তিনি এতে বাধা দেওয়া দূরের কথা, উল্টো সহযোগিতা করেন জামাইকে। জামাই জুলহাস স্বর্ণ চুরি করে তা শ্বশুরের হাতেই তুলে দেয়। আর শ্বশুর সেই স্বর্ণ বিক্রি করেন। মিরপুর থেকে চুরি করা স্বর্ণও জুলহাস তার শ্বশুরের হাতেই তুলে দেয়। শ্বশুর সেই স্বর্ণ চাঁদপুর উত্তর মতলবের ছেঙ্গারচর বাজারের একটি স্বর্ণের দোকানে বিক্রি করে দেন। অভিযান চালানোর সময় জামাই জুলহাস গ্রেফতার হলেও পালিয়ে যান শ্বশুর আলাউদ্দিন।
মিরপুর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, স্বর্ণ চুরির ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ৮ ভরি ১০ আনা স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।